শিরোনাম: বন্ধুত্বের হাতছানি: নিজের বাড়ি আছে, বন্ধুদের কীভাবে সাহায্য করবেন?
বর্তমান সময়ে, বিশেষ করে ত্রিশোর্ধ বয়সের তরুণ প্রজন্মের জীবনে আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য আনাটা বেশ কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। একদিকে যেমন বাড়ছে জীবনযাত্রার ব্যয়, তেমনই বাড়ছে কর্মসংস্থানের অনিশ্চয়তা।
এমন পরিস্থিতিতে কারো যদি নিজের বাড়ি ও জমির মতো সম্পদ থাকে, তবে তিনি বন্ধুদের পাশে দাঁড়াতে চান—এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কীভাবে সাহায্য করলে বন্ধুদের আত্মসম্মানে আঘাত না লেগে বরং তাদের উপকার হয়, সেই বিষয়ে অনেক সময় দ্বিধা তৈরি হয়। সম্প্রতি, এমনই এক বন্ধুর অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
ওই বন্ধুটি, যিনি নিজের বাড়ি ও জমির মালিক, বন্ধুদের আর্থিক কষ্টের কথা শুনে তাদের সাহায্য করতে চান। তিনি বন্ধুদের থাকার জন্য বিনা ভাড়ায় জায়গা দিতে চেয়েছেন, এমনকি সেখানে একটি মোবাইল হোম তৈরি করার প্রস্তাবও দিয়েছেন।
কিন্তু তিনি বুঝতে পারছেন না, তার এই চেষ্টাগুলো বন্ধুদের কতটা উপকারে আসছে। বন্ধুদের সাহায্য করতে চাওয়ার এই ভালো মানসিকতা সত্ত্বেও, তিনি একটি দ্বিধায় ভুগছেন। বন্ধুদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়েও, তিনি যেন তাদের জীবনে তেমন কোনো পরিবর্তন আনতে পারছেন না।
এই বিষয়ে মনোবিদ ক্রিস মিলসের পরামর্শ হলো, বন্ধুদের সাহায্য করার আগে তাদের মানসিক অবস্থাটা বোঝা দরকার। বন্ধুদের হয়তো আর্থিক সাহায্যের চেয়ে বেশি প্রয়োজন—তাদের নিজেদের সম্মান বজায় রাখা এবং স্বাবলম্বী হওয়ার মানসিকতাকে টিকিয়ে রাখা।
বন্ধুদের হয়তো মনে হতে পারে, অন্যের সাহায্য নিলে তারা সমাজের চোখে ছোট হয়ে যাবেন বা তাদের আত্মমর্যাদায় আঘাত লাগবে।
ক্রিস মিলস মনে করেন, বন্ধুদের সাহায্য করার সবচেয়ে কার্যকর উপায় হতে পারে তাদের সঙ্গে সময় কাটানো। তাদের সমস্যার কথা শোনা এবং তাদের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী সহায়তা করা যেতে পারে।
বন্ধুদের হয়তো এমন একজন বন্ধু দরকার, যিনি তাদের কথা মন দিয়ে শুনবেন এবং তাদের মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করবেন। কখনো কখনো বন্ধুদের জন্য কিছুদিনের বিশ্রাম বা অবকাশের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বন্ধুদের কাছ থেকে সরাসরি তাদের কী প্রয়োজন, সে সম্পর্কে জানতে চাওয়া। বন্ধুদের হয়তো আপনার প্রস্তাবিত সাহায্য ভালো নাও লাগতে পারে। সেক্ষেত্রে, তাদের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী সাহায্য করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
বন্ধুত্বের সম্পর্ক হলো একে অপরের প্রতি সহানুভূতি ও সহযোগিতার এক সুন্দর বন্ধন। তবে, সাহায্য করার ক্ষেত্রে বন্ধুদের মানসিক অবস্থা ও আত্মসম্মানকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
তাদের স্বাবলম্বী হওয়ার ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে, প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক সহায়তা করাই হলো আসল বন্ধুত্বের পরিচয়।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান