নতুন প্রজন্মের জন্য অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা মোকাবিলায় অভিজ্ঞ মিলিনিয়ালদের পরামর্শ।
বর্তমান বিশ্বে অর্থনৈতিক অস্থিরতা বাড়ছে, যার প্রভাব পড়ছে তরুণ প্রজন্মের উপর। একদিকে যেমন কোভিড-১৯ অতিমারীর ধাক্কা, তেমনই অন্যদিকে মূল্যবৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের অভাব তাদের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, অর্থনৈতিক মন্দার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মিলিনিয়াল প্রজন্ম, তাদের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে, টিকটকের মতো সামাজিক মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে (Gen Z) বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন।
২০০০ সালের দশকের শেষের দিকে, যখন বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়, তখন মিলিনিয়ালদের অনেকে তরুণ ছিলেন। সেই সময় তারা চাকরি ও আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন। বর্তমানে, সেই অভিজ্ঞতার আলোকে তারা Gen Z-কে জানাচ্ছেন কীভাবে এই কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করা যায়।
মিলিনিয়ালদের পরামর্শগুলো মূলত কয়েকটি প্রধান বিষয়ের উপর কেন্দ্র করে:
- সাশ্রয়ী হওয়া: বর্তমানে, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে সঞ্চয়ের প্রবণতা কমে যাচ্ছে। মিলিনিয়ালরা বলছেন, এই সময়ে অপ্রয়োজনীয় খরচ কমানো এবং সঞ্চয়ের অভ্যাস করা খুবই জরুরি।
- খরচ কমানোর উপায়: টিকটকে অনেকেই তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা জানাচ্ছেন। যেমন, বন্ধুদের সাথে সাবস্ক্রিপশন ভাগাভাগি করা, বাইরে খাওয়া কমানো, অথবা রূপচর্চার খরচ কমানোর মতো পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।
- যে কোনো কাজ করতে প্রস্তুত থাকা: মিলিনিয়ালদের মতে, অর্থনৈতিক মন্দার সময় যেকোনো কাজ করতে প্রস্তুত থাকতে হবে। এমনকী, কম বেতনের হলেও, কাজ করে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করা যেতে পারে।
- জরুরি সঞ্চয় তৈরি করা: অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য একটি জরুরি তহবিল তৈরি করা প্রয়োজন। এতে চাকরি চলে গেলে বা অন্য কোনো আর্থিক সমস্যা হলে, তা সামাল দেওয়া সহজ হবে।
তবে, শুধু পরামর্শ নয়, মিলিনিয়ালরা তাদের নিজেদের অভিজ্ঞতার কথাও জানাচ্ছেন। ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক মন্দায় তারা কিভাবে টিকে ছিলেন, সেই গল্পগুলো Gen Z-কে সাহস যোগাচ্ছে। সেই সময়কার পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে তারা বলছেন, যদিও অনেকে চাকরি হারিয়েছিলেন, কিন্তু জীবনযাত্রার খরচ কম থাকায় তারা অন্য কোনো কাজ করে নিজেদের টিকিয়ে রাখতে পেরেছিলেন।
বাংলাদেশেও তরুণ প্রজন্মের মধ্যে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা বাড়ছে। একদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, অন্যদিকে চাকরির বাজারে তীব্র প্রতিযোগিতা—এই পরিস্থিতিতে অনেকেই ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। মিলিনিয়ালদের পরামর্শগুলো বাংলাদেশের তরুণদের জন্য খুবই প্রাসঙ্গিক হতে পারে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে, তরুণরা তাদের খরচ কমানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে পারে। যেমন, বিনোদনের খরচ কমানো, পোশাকের ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী হওয়া, অথবা ডেটা প্যাকের ব্যবহার সীমিত করা যেতে পারে। এছাড়াও, সরকারি সঞ্চয় প্রকল্প, ব্যাংকের ফিক্সড ডিপোজিট বা অন্যান্য বিনিয়োগের মাধ্যমে সঞ্চয় করা যেতে পারে।
মিলিনিয়ালদের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে, Gen Z তাদের ভবিষ্যৎ আরও সুরক্ষিত করতে পারে। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার এই সময়ে, সচেতনতা, সাশ্রয়ী হওয়া এবং সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়তে পারে।
তথ্য সূত্র: CNN