ঘরের আশ্রয় কেড়ে নিলেন বন্ধু! কঠিন সময়ে ‘হৃদয়হীন’ আখ্যা!

কাজের চাপে অতিষ্ঠ হয়ে বান্ধবীকে বাসা ছাড়তে বললেন তরুণী: বন্ধুত্বের নতুন সমীকরণ।

বন্ধু যখন কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যায়, তখন তাকে সাহায্য করাটা স্বাভাবিক। কিন্তু সেই সাহায্য যদি সীমাহীন হয়ে পরে, তবে তা হয়তো সম্পর্কের অন্য এক দিক তুলে ধরে। এমনই এক ঘটনার সাক্ষী ২১ বছর বয়সী এক তরুণী, যিনি তার প্রাক্তন কলেজ রুমমেটকে কয়েক দিনের জন্য আশ্রয় দিয়েছিলেন, কিন্তু সেই কয়েক দিন গিয়ে দাঁড়ায় তিন সপ্তাহে।

ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন তরুণীর পুরনো বান্ধবী, যিনি সম্প্রতি চাকরি হারিয়েছেন এবং প্রেম ভেঙে যাওয়ার পর মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন, তার কাছে কয়েক দিনের জন্য থাকার আবেদন করেন। তরুণীটি রাজিও হন। কিন্তু কিছুদিন পরই তিনি বুঝতে পারেন, পরিস্থিতি তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।

মেয়েটি জানান, তার বান্ধবী এসে তার সোফায় ঘুমাচ্ছেন, তার খাবার খাচ্ছেন, জিনিসপত্র ব্যবহার করছেন, কিন্তু কোনো ধরনের সহযোগিতা করছেন না। এমনকি তরুণীটি যখন বাড়ি থেকে কাজ করেন, তখন তার বান্ধবীর কারণে কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে, বান্ধবী কান্নাকাটি শুরু করেন এবং জানান যে তিনি একেবারে একা হয়ে গিয়েছেন এবং তরুণীই তার একমাত্র ভরসা।

একদিন কাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ের সময়, তরুণীর বান্ধবী উচ্চ শব্দে গান বাজাচ্ছিলেন এবং ফোনে কথা বলছিলেন। বিষয়টি তরুণীর কাছে অসহ্য হয়ে ওঠে। তিনি জানান, বান্ধবীর এমন আচরণে তিনি খুব বিব্রত হয়েছিলেন। অবশেষে তিনি বান্ধবীকে চলে যেতে বলেন এবং এমনকি তার টিকিট কাটার প্রস্তাবও দেন।

কিন্তু তরুণীর এই সিদ্ধান্তে তার বান্ধবী খুব হতাশ হন। তিনি তরুণীকে ‘হৃদয়হীন’ বলে অভিযুক্ত করেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন কিছু পোস্ট করেন, যেখানে বন্ধুদের কঠিন সময়ে পাশে থাকার কথা বলা হয়েছে।

এই ঘটনার পর, তরুণীটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম রেডডিটে (Reddit) তার এই দ্বিধা নিয়ে একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি জানতে চান, বান্ধবীকে চলে যেতে বলার জন্য তিনি ঠিক না ভুল করেছেন?

রেডডিটের ব্যবহারকারীদের মধ্যে অনেকেই তরুণীর প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছেন। তাদের মতে, বান্ধবী তরুণীর সরলতার সুযোগ নিচ্ছেন। একজন মন্তব্য করেন, “বন্ধুত্ব ভালো, তবে অতিথিদের তিন দিনের বেশি রাখা ঠিক নয়।” অনেকেই মনে করেন, তরুণীর বান্ধবী তার ভালোমানুষির সুযোগ নিচ্ছেন এবং তার কোনো সম্মান নেই।

তবে, এই ঘটনার পর বন্ধুত্বের সংজ্ঞা নিয়ে নতুন করে ভাববার অবকাশ তৈরি হয়েছে। কঠিন সময়ে বন্ধুদের পাশে দাঁড়ানো যেমন জরুরি, তেমনি নিজের ভালো থাকার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। সবারই উচিত সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি সুস্থ সীমারেখা বজায় রাখা।

তথ্যসূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *