সাবা স্যামসের সাহসী স্বীকারোক্তি: ‘আমি চেয়েছিলাম গল্পগুলো হবে যৌন আবেদনময়ী’!

ব্রিটিশ লেখিকা সাবা শামস: আধুনিক নারীর জীবন ও সম্পর্কের গল্প

বর্তমান সময়ের তরুণ প্রজন্মের জীবন এবং সম্পর্কের গল্প নিয়ে লিখেন এমন একজন লেখকের নাম সাবা শামস। ব্রিটেনের এই তরুণ লেখকের প্রথম গল্প সংকলন ‘সেন্ড নিউডস’ ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

এরপর তিনি লেখেন তার প্রথম উপন্যাস ‘গাঙ্ক’। সাবা শামসের লেখায় নারী জীবনের নানা দিক, মাতৃত্ব, বন্ধুত্বের সম্পর্ক, এবং শরীরের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির মতো বিষয়গুলো নতুন আঙ্গিকে উপস্থাপন করা হয়েছে।

সম্প্রতি প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি তার লেখক জীবন, ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং সাহিত্যকর্ম নিয়ে কথা বলেছেন।

সাবা শামস মাত্র বাইশ বছর বয়সে প্রথম বই প্রকাশের প্রস্তাব পান। তখন তিনি সবেমাত্র মা হয়েছেন এবং সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছিলেন।

তিনি জানান, শুরুতে লেখক হিসেবে নিজের পরিচিতি নিয়ে তার দ্বিধা ছিল। “আমি তখনও লিখতেই শিখছি,” তিনি বলেন।

তার গল্প সংকলন ‘সেন্ড নিউডস’ প্রকাশিত হওয়ার পর তিনি বিবিসি ন্যাশনাল শর্ট স্টোরি অ্যাওয়ার্ড এবং এজ হিল শর্ট স্টোরি প্রাইজ জেতেন।

এরপর গ্রান্টা ম্যাগাজিন তাকে ‘বেস্ট অফ ইয়ং ব্রিটিশ নভেলিস্টস’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।

বর্তমানে আঠাশ বছর বয়সী সাবা শামসের দুটি সন্তান রয়েছে। তিনি বলেন, মা হওয়ার পর জীবন সম্পূর্ণ বদলে গেছে।

একদিকে যেমন লেখক হিসেবে তার পরিচিতি বেড়েছে, তেমনি ব্যক্তিগত জীবনেও এসেছে অনেক পরিবর্তন।

তার নতুন উপন্যাস ‘গাঙ্ক’-এর প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে ব্রাইটনে। যেখানে একটি নোংরা ছাত্রাবাসের গল্প তুলে ধরা হয়েছে।

উপন্যাসে নারী ও নারীর সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে।

সাবা শামসের লেখায় নারী জীবনের জটিলতা ও সম্পর্কের টানাপোড়েন বিশেষভাবে ফুটে ওঠে। বিশেষ করে বন্ধুত্বের সম্পর্ক, ভালোবাসার ভিন্ন সংজ্ঞা এবং তরুণীদের মনস্তত্ত্ব তিনি অত্যন্ত নিপুণভাবে ফুটিয়ে তোলেন।

‘সেন্ড নিউডস’-এর গল্পগুলোতে নারী জীবনের নানা ঘাত-প্রতিঘাত, আকাঙ্ক্ষা, এবং সমাজের চোখে তাদের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

সাবা শামস মনে করেন, আজকের সমাজে নারীরা তাদের নিজস্ব শক্তি এবং দুর্বলতা নিয়েই বেঁচে আছে। তিনি বলেন, নারীদের শরীর এবং তাদের ভেতরের অনুভূতিগুলো নিয়ে কথা বলাটা জরুরি।

তার লেখায় শরীর এবং যৌনতার বিষয়গুলো খোলামেলাভাবে এসেছে, যা অনেক পাঠকের কাছে নতুনত্বের স্বাদ জুগিয়েছে।

সাবা শামসের ব্যক্তিগত জীবনও তার লেখার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তিনি বলেন, মা হওয়ার পর তিনি তরুণ জীবনের অনেক কিছুকে নতুন করে উপলব্ধি করেছেন।

মাতৃত্বের অভিজ্ঞতা তাকে নারী জীবনের আরও গভীরে প্রবেশ করতে সাহায্য করেছে। তিনি মনে করেন, পরিবার এবং সমাজের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নারীদের সম্পর্কের ধারণাতেও পরিবর্তন এসেছে।

সাবা শামস তার লেখায় প্রচলিত ধ্যান-ধারণার বাইরে গিয়ে নারীদের জীবনকে তুলে ধরতে চেয়েছেন।

তিনি মনে করেন, আজকের তরুণ প্রজন্মের নারীরা অনেক বেশি সচেতন এবং তাদের নিজস্ব জগৎ সম্পর্কে তারা ধারণা রাখে।

তাদের সমস্যাগুলোও আগের চেয়ে অনেক ভিন্ন। সাবা শামসের কাজ সেই পরিবর্তনগুলোকেই যেন নতুন করে সংজ্ঞায়িত করে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *