যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) ক্ষমতা গ্রহণের ১০০ দিনের মাথায় এসে জনপ্রিয়তা নিয়ে নতুন এক জরিপ প্রকাশ করেছে সিএনএন (CNN)। এতে দেখা যাচ্ছে, গত কয়েক দশকের মধ্যে কোনো প্রেসিডেন্টের এই সময়ে পাওয়া জনপ্রিয়তার চেয়ে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা অনেক কম। এই তথ্য দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার নীতির প্রভাব সম্পর্কে ধারণা দেয়।
সিএনএনের জরিপ অনুযায়ী, বর্তমানে ট্রাম্পের জনপ্রয়িতার হার ৪১ শতাংশ। অন্তত গত সাত দশক ধরে কোনো নতুন প্রেসিডেন্টের এই সময়ে এত কম জনপ্রিয়তা দেখা যায়নি। এই চিত্র ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের থেকেও খারাপ। তার কার্যক্রমের প্রতি তীব্র অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন দেশটির একটা বড় অংশ মানুষ। বিশেষ করে নারী, হিস্পানিক এবং স্বতন্ত্র ভোটারদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।
জরিপে দেখা গেছে, অর্থনীতি, মূল্যস্ফীতি, বাণিজ্য এবং পররাষ্ট্রনীতিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ট্রাম্পের ওপর জনগণের আস্থা কমেছে। অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে তার জনপ্রিয়তা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে, যা তার ক্যারিয়ারের সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া, ফেডারেল সরকারের ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও তিনি আগের চেয়ে পিছিয়ে পড়েছেন।
অর্থনৈতিক নীতি এবং বিভিন্ন শুল্ক আরোপের কারণে বাজারে অস্থিরতা দেখা দেওয়ায় অনেক আমেরিকান তার অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছেন। তারা মনে করছেন, ট্রাম্পের নেওয়া পদক্ষেপগুলো দেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
অন্যদিকে, ট্রাম্পের অভিবাসন নীতিতেও আগের চেয়ে ভাটা পড়েছে। যদিও এক সময় এই ইস্যুতে তার জনপ্রিয়তা বেড়েছিল, কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তা কমেছে। তবে, লিঙ্গ পরিচয় এবং ট্রান্সজেন্ডার বিষয়ক নীতিতে তার কিছু সমর্থক এখনো রয়েছেন।
জরিপে অংশ নেওয়া একাধিক ব্যক্তি তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। তারা ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশগুলোর সমালোচনা করেছেন এবং মনে করেন, তিনি অনেক ক্ষেত্রে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করছেন না। নিউ মেক্সিকোর (New Mexico) বাসিন্দা জর্জ ম্যাসট্রোডোনাটো (George Mastrodonato) নামের একজন ট্রাম্প সমর্থকও তার কিছু সিদ্ধান্তের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে দেশের নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, জনগণের মধ্যে তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা এবং দেশের সমস্যা সমাধানে তার পদক্ষেপের কার্যকারিতা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।
এই জরিপটি পরিচালনা করেছে এসএসআরএস (SSRS) নামক একটি সংস্থা। গত ১৭ থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত ১,৬৭৮ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ওপর অনলাইন এবং টেলিফোনের মাধ্যমে এই জরিপ চালানো হয়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন