ঢাকা, [তারিখ দিন] – প্যারিসে ২০১৬ সালে কিম কার্দাশিয়ানকে অপহরণ ও ডাকাতির ঘটনায় অভিযুক্ত এক ব্যক্তি, ইউনিস আব্বাস, প্যারিসের আদালতে তার ভূমিকার দায় স্বীকার করতে রাজি হয়েছেন। ডাকাতির ঘটনার শুরুতেই তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
এই চাঞ্চল্যকর মামলার বিচার সোমবার থেকে শুরু হয়েছে। আব্বাস (৭১) সহ আরও নয় জন এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত।
তাদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র ডাকাতি ও অপহরণের মতো গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। আব্বাস জানিয়েছেন, তিনি আদালতে ক্ষমা চাইবেন।
খবর অনুযায়ী, কিম কার্দাশিয়ানকেও এই মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য আদালতে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৬ সালের প্যারিস ফ্যাশন উইকের সময় একটি অ্যাপার্টমেন্টে ডাকাতরা কিম কার্দাশিয়ানকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এবং তার মূল্যবান অলঙ্কার লুট করে নিয়ে যায়। ঘটনার সময় আতঙ্কে কিম কার্দাশিয়ান জীবননাশের আশঙ্কা করেছিলেন।
আব্বাস জানিয়েছেন, তিনি ওই ঘটনার সময় ভবনের নিচতলায় পাহারার দায়িত্বে ছিলেন এবং পালানোর পথ পরিষ্কার করতে সহায়তা করেছিলেন। যদিও তার কাছে কোনো অস্ত্র ছিল না এবং তিনি সরাসরি কার্দাশিয়ানকে কোনো হুমকি দেননি, তবুও তিনি এই অপরাধের দায় স্বীকার করেছেন।
২০১৭ সালের জানুয়ারিতে আব্বাসকে গ্রেফতার করা হয় এবং প্রায় ২১ মাস কারাভোগের পর তিনি জামিনে মুক্তি পান। জানা যায়, ২০২১ সালে তিনি “আই সিকোয়েস্টার্ড কিম কার্দাশিয়ান” নামে একটি বই লেখেন।
তদন্তকারীদের তথ্যানুসারে, ডাকাতরা কিম কার্দাশিয়ানকে হাত-পা বেঁধে তার থেকে কয়েক মিলিয়ন ডলার মূল্যের অলঙ্কার লুট করে। ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে কার্দাশিয়ান জানান, ডাকাতরা তার দিকে বন্দুক তাক করে তার বাগদানের আংটি চেয়েছিল।
তিনি এমনকি ধর্ষণের শিকার হয়ে মারা যেতে পারেন বলেও আশঙ্কা করেছিলেন।
লুট হওয়া অলংকারের মধ্যে ছিল প্রায় ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (সে সময়কার বিনিময় হার অনুযায়ী যা ছিল প্রায় ৬৩ কোটি টাকার বেশি) মূল্যের জিনিসপত্র। পরে অবশ্য একটি হীরার ক্রুশ পাওয়া গিয়েছিল, যা এই ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িত ছিল।
আব্বাস জানিয়েছেন, ডাকাতির সময় তিনি কিম কার্দাশিয়ানের পরিচয় জানতেন না। তিনি শুধু শুনেছিলেন যে তিনি একজন ‘র্যাপারের স্ত্রী’। পরের দিন টিভিতে খবর দেখে তিনি বুঝতে পারেন যে তিনি আসলে কে ছিলেন।
ফরাসি বিচারব্যবস্থা অনুযায়ী, এই মামলার বিচার একটি জুরিবোর্ডের মাধ্যমে হবে, যা গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। আব্বাস জানিয়েছেন, তিনি তার ভূমিকা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরবেন, তবে অন্য সহযোগীদের নাম প্রকাশ করতে রাজি নন।
তিনি বলেন, “আমি শুধু বাইরের একজন। আমি এই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী নই, তবে আমার দায়বদ্ধতা স্বীকার করছি।”
তদন্তে জানা যায়, এই ঘটনার তদন্তে ফরাসি পুলিশকে সহায়তা করেছিল যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। মামলার তদন্ত বিষয়ক তথ্য দিয়ে আব্বাসের লেখা বইটির সহ-লেখক থিয়েরি নিয়েমেন জানান, কিম কার্দাশিয়ান সে সময় বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন এবং ২০১৬ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ঘটনাটি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল।
কিম কার্দাশিয়ানের আইনজীবী জানিয়েছেন, তার মক্কেল চান ফরাসি আইন অনুযায়ী এবং মামলার সকল পক্ষের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে এই বিচার প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হোক।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস