মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের কুখ্যাত স্নাইপার ক্রিস কাইলের জীবনাবসান হলেও তাঁর স্মৃতি আজও অম্লান। তাঁর সাহসিকতা এবং দেশের প্রতি ভালোবাসার গল্প আজও অনেকের কাছে অনুপ্রেরণা।
ক্রিস কাইলের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী এবং দুই সন্তান – কোল্টন ও ম্যাকেনা – কিভাবে শোক কাটিয়ে উঠেছেন, এবং বাবার স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রেখেছেন, সেই গল্পই আজ তুলে ধরা হলো।
ক্রিস কাইল ছিলেন মার্কিন নৌবাহিনীর একজন দক্ষ সদস্য, যিনি ইরাকে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর লক্ষ্যভেদের ক্ষমতা ছিল অসাধারণ, যা তাঁকে “আমেরিকান স্নাইপার” উপাধি এনে দেয়।
২০০৯ সালে তিনি সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন এবং পরিবারকে আরও বেশি সময় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে, ২০১৩ সালে এক মর্মান্তিক ঘটনার শিকার হয়ে তিনি নিহত হন।
তাঁর প্রয়াণের সময় কোল্টনের বয়স ছিল আট বছর এবং ম্যাকেনার ছয় বছর।
বাবার মৃত্যুর পর সন্তানদের জীবনে নেমে আসে গভীর শোকের ছায়া। কোল্টন জানিয়েছেন, বাবার মৃত্যু তাঁকে খুবই কষ্ট দিয়েছিল।
অন্যদিকে, ম্যাকেনা জীবনের সবকিছুকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখতে শুরু করেছিলেন, কারণ তিনি সবসময় ভয় পেতেন, যদি তাঁর ভালো কিছু কেড়ে নেওয়া হয়! তবে, তাঁরা দুজনেই তাঁদের মায়ের সমর্থন, থেরাপি এবং গভীর ধর্মীয় বিশ্বাসের মাধ্যমে সেই কঠিন সময় কাটিয়ে উঠেছেন।
বর্তমানে কোল্টন কাইল তাঁর বাবার “আমেরিকান স্নাইপার” ব্র্যান্ডের দেখাশোনা করছেন। তিনি এই ব্র্যান্ডের মাধ্যমে বাবার আদর্শ – কর্তব্যপরায়ণতা, উৎসর্গ, দেশপ্রেম, ঈশ্বরভীতি, স্বাধীনতা, পরিবার এবং শ্রেষ্ঠত্ব – সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চান।
খেলাধুলা এবং শরীরচর্চাতেও তাঁর আগ্রহ রয়েছে। ভবিষ্যতে তিনি অ্যাপোলোজেটিক্স-এর উপর পিএইচডি করারও পরিকল্পনা করছেন।
অন্যদিকে, ম্যাকেনা বর্তমানে একটি গ্যাপ ইয়ারে (শিক্ষাবর্ষ বিরতি) রয়েছেন। তিনি স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাথে কাজ করছেন এবং সামাজিক মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম তুলে ধরছেন।
ম্যাকেনা ভবিষ্যতে মনোবিজ্ঞান নিয়ে কাজ করতে চান, এবং “তায়া ও ক্রিস কাইল ফাউন্ডেশন”-এ পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করার স্বপ্ন দেখেন। এছাড়াও, তিনি একটি পডকাস্ট তৈরি করার পরিকল্পনা করছেন, যেখানে তিনি তাঁর পরিবার এবং অনুসরণকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন।
ক্রিস কাইলের স্ত্রী তায়া কাইল, তাঁর স্বামীর স্মৃতি রক্ষার জন্য একটি ফাউন্ডেশন তৈরি করেছেন, যা সৈন্যদের পরিবারগুলোর কল্যাণে কাজ করে। তিনি নিজেও একজন লেখক, যিনি তাঁর স্বামীর জীবন এবং তাঁদের সম্পর্কের গল্প নিয়ে বই লিখেছেন।
কোল্টন ও ম্যাকেনা দুজনেই তাঁদের বাবার আদর্শকে অনুসরণ করে জীবনকে নতুনভাবে সাজাচ্ছেন। তাঁরা তাঁদের বাবার স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে চান, এবং মানুষের কাছে তাঁর আদর্শগুলো পৌঁছে দিতে চান।
তাঁদের এই যাত্রা প্রমাণ করে, শোককে জয় করে কিভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া যায়।
তথ্য সূত্র: পিপল