ফরাসি ভূখণ্ডে একটি মসজিদে এক মালীয় মুসলিমকে হত্যার ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত লা গ্রাঁদ-কোম্ব শহরে শুক্রবারের এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজন পলাতক ফরাসি নাগরিকের সন্ধান চলছে। ফরাসি প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বায়রুর মতে, এটি ইসলামবিদ্বেষীতার ফল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত ব্যক্তি ওই মসজিদের ভেতরে নামাজ পড়ছিলেন, এবং হামলাকারী তাকে ছুরিকাঘাত করে। জানা যায়, হামলাকারী তার মোবাইল ফোনে পুরো ঘটনার ভিডিও ধারণ করেছে।
নিহত ব্যক্তির বয়স ছিল ২০-এর কোঠায়। ফরাসি সংবাদ সংস্থা এএফপি’র খবর অনুযায়ী, সন্দেহভাজন ব্যক্তি একজন ফরাসি নাগরিক, যার বসনীয় বংশোদ্ভূত। তার নাম অলিভার।
পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারী এখনো ধরা পড়েনি। সরকারি কৌঁসুলি আবদেলক্রিম গ্রিনি জানিয়েছেন, অলিভারের জন্ম ২০০৪ সালে, তিনি বেকার এবং তার কোনো অপরাধমূলক রেকর্ড নেই। তাকে দ্রুত গ্রেফতার করা জরুরি, কারণ তিনি আরও বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারেন।
প্যারিসের গ্র্যান্ড মসজিদ এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তারা নিহত ব্যক্তির পরিবারের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেছে এবং কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত তদন্তের দাবি জানিয়েছে। মসজিদের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে, এই ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী’ কার্যকলাপ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে কিনা।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টে নিহত ব্যক্তির পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, “ধর্মের ভিত্তিতে ঘৃণা ও বিদ্বেষের কোনো স্থান ফ্রান্সে নেই। উপাসনার স্বাধীনতা লঙ্ঘন করা যাবে না।
এই ঘটনার পর ফরাসি সরকারের মন্ত্রী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা শোক প্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রিতেলু রবিবার লা গ্রাঁদ-কোম্বে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এদিকে, ইসলামবিদ্বেষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর জন্য লা গ্রাঁদ-কোম্বে শহরে একটি সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। প্যারিসের রিপাবলিক স্কয়ারসহ ফ্রান্সের বিভিন্ন স্থানেও বিক্ষোভের পরিকল্পনা করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা নিহত ব্যক্তির স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করবেন।
বামপন্থী দল লা ফ্রান্স ইনসোমিজের বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা