ইরানের একটি প্রধান বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, নিহত ২৮, আহত প্রায় ১০০০।
ইরানের দক্ষিণাঞ্চলের বন্দর শহর বান্দার আব্বাসের কাছে শহীদ রাজাঈ বন্দরে শনিবার এক ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ২৮ জন নিহত হয়েছে এবং প্রায় ১০০০ জন আহত হয়েছে। খবর অনুযায়ী, বিস্ফোরণের পর দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং হতাহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধানে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, বন্দরে রাখা একটি বিপজ্জনক রাসায়নিক পদার্থের গুদামে আগুন লাগার কারণে এই বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে। তবে, কোনো কোনো সূত্রে সামরিক কাজে ব্যবহৃত একটি রাসায়নিকের উপস্থিতির কথাও শোনা যাচ্ছে।
বিস্ফোরণের পরপরই উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয় এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকল কর্মীরা প্রাণপণ চেষ্টা চালান। রাশিয়ার পক্ষ থেকে জরুরি অবস্থার মোকাবিলার জন্য বিশেষজ্ঞ দল ও বিশেষ অগ্নিনির্বাপক বিমান পাঠানো হয়েছে। বন্দর এলাকার পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে।
দুর্ঘটনার পর বিভিন্ন দেশ ইরানের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, পাকিস্তান, ভারত, তুরস্ক, রাশিয়া, জাতিসংঘ, জার্মানি এবং লেবাননের হিজবুল্লাহসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দেশ শোক প্রকাশ করেছে। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিস্ফোরণে আহত তিনজন চীনা নাগরিক স্থিতিশীল অবস্থায় আছেন।
ইরানের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী জানিয়েছেন, বন্দরের প্রধান এলাকাগুলোতে পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়েছে এবং শ্রমিকরা পুনরায় কন্টেইনার লোড করা ও কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের কাজ শুরু করেছেন।
বন্দর কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানা গেছে, বিস্ফোরণে বন্দরের একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে অন্যান্য অংশে পণ্য পরিবহনের কাজ স্বাভাবিকভাবে চলছে। কর্তৃপক্ষ নিহতদের স্মরণে সোমবার জাতীয় শোক দিবস এবং হোরমুজগান প্রদেশে তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বিস্ফোরণের কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। তবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ফল। ঘটনার তদন্ত শেষ হলে বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা