টাইটানিক জাহাজের এক যাত্রী, কর্নেল আর্চিবাল্ড গ্রেসির লেখা একটি চিঠি সম্প্রতি নিলামে বিপুল দামে বিক্রি হয়েছে। ১৯১২ সালে আটলান্টিক মহাসাগরে জাহাজটি ডুবে যাওয়ার কয়েক দিন আগে তিনি চিঠিটি লিখেছিলেন। নিলামে এর দাম উঠেছে প্রায় চার লক্ষ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪ কোটি ৪০ লক্ষ টাকার সমান।
ঐতিহাসিক এই চিঠিটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এতে টাইটানিক সম্পর্কে গ্রেসির কিছু মন্তব্য ছিল, যা যেন এক ভবিষ্যদ্বাণী। চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন, “জাহাজটি সুন্দর, তবে আমি আমার যাত্রার শেষ না হওয়া পর্যন্ত এর সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করব না।”
এই ঘটনার পাঁচ দিনের মধ্যেই টাইটানিক ডুবে যায় এবং এতে ১৫০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।
চিঠিটি লেখার সময়, কর্নেল গ্রাসি ছিলেন টাইটানিকের প্রথম শ্রেণির যাত্রী। ১৯১২ সালের ১০ এপ্রিল তিনি এই চিঠিটি লেখেন। এর কয়েক দিন পরেই, ১৫ এপ্রিল তারিখে জাহাজটি এক ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হয়।
জানা যায়, দুর্ঘটনার রাতে গ্রাসি তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন এবং সকালে স্কোয়াশ খেলার পরিকল্পনা ছিল তার। কিন্তু গভীর রাতে জাহাজের ঝাঁকুনিতে তার ঘুম ভাঙে। এরপর তিনি নারী ও শিশুদের লাইফবোটে উঠতে সাহায্য করেন।
ভাগ্যক্রমে গ্রাসি সেই ভয়াবহ সমুদ্রযাত্রা থেকে রক্ষা পান। পরবর্তীতে তিনি ‘দ্য ট্রুথ অ্যাবাউট দ্য টাইটানিক’ নামে একটি বই লেখেন, যেখানে তিনি তার সেই অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেছেন।
তবে, এই দুর্ঘটনার কারণে সৃষ্ট শারীরিক জটিলতা এবং অতিরিক্ত ঠান্ডায় জমে যাওয়া থেকে হওয়া অসুস্থতার কারণে ১৯১২ সালের ডিসেম্বরে তার মৃত্যু হয়।
চিঠিটি নিলামে তোলার আগে, নিলামকারী অ্যান্ড্রু অলড্রিজ জানান, গ্রেসির চিঠিটি “এ ধরনের সেরা চিঠিগুলোর মধ্যে অন্যতম।”
তিনি আরও বলেন, “চিঠিতে কর্নেল আর্চিবাল্ড গ্রেসির মতো একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির হাতের লেখা রয়েছে। চিঠিতে ‘এটি একটি সুন্দর জাহাজ, তবে আমি আমার যাত্রার শেষ না হওয়া পর্যন্ত এর সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করব না’ – এই বাক্যটি যেন এক ভবিষ্যদ্বাণী।”
ঐতিহ্যপূর্ণ এই নিলামে টাইটানিকের আরও অনেক স্মৃতিচিহ্ন বিক্রি হয়েছে। এর আগে, ক্যাপ্টেনকে দেওয়া একটি সোনার পকেট ঘড়িও উচ্চ মূল্যে বিক্রি হয়েছিল। এমনকি, ১৯৯৭ সালের ‘টাইটানিক’ সিনেমায় ব্যবহৃত কিছু জিনিসও নিলামে প্রচুর দামে বিক্রি হয়েছে।
তথ্য সূত্র: পিপল