চীনের (China) সাথে ফিলিপাইনের (Philippines) মধ্যে দক্ষিণ চীন সাগরের একটি বিতর্কিত বালুচরে পতাকা প্রদর্শনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। সম্প্রতি, উভয় দেশই এই এলাকার উপর নিজেদের অধিকার জাহির করতে তৎপর হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, এই ঘটনাটি এমন এক সময়ে ঘটছে যখন যুক্তরাষ্ট্র (US) এবং ফিলিপাইনের মধ্যে বার্ষিক সামরিক মহড়া চলছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
বিতর্কিত এলাকাটি ‘স্যান্ডি কে’ নামে পরিচিত, যা স্পার্টলি দ্বীপপুঞ্জের একটি অংশ। চীনা কোস্ট গার্ড (China Coast Guard) জানিয়েছে, তারা দু’সপ্তাহ আগে এই বালুচরে প্রবেশ করে নিজেদের পতাকা উত্তোলন করে এবং সার্বভৌম অধিকার প্রয়োগ করে।
এর প্রতিক্রিয়ায় ফিলিপাইনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের নৌ, উপকূল এবং পুলিশ বাহিনীও সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে। ফিলিপাইনের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়, তারা চীনা কোস্ট গার্ডের জাহাজ এবং সামরিক বাহিনীর উপস্থিতি লক্ষ্য করেছে।
চীন এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে ফিলিপাইনকে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে। চীনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ফিলিপাইনের এই পদক্ষেপ তাদের আঞ্চলিক সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন।
অন্যদিকে, ফিলিপাইনের পক্ষ থেকে চীনের দাবিকে প্রত্যাখ্যান করে জানানো হয়েছে, তারা বিতর্কিত এলাকার উপর নিজেদের অধিকার ধরে রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ফিলিপাইনের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জোনাথন মালায় (Jonathan Malaya) বলেন, ‘বাস্তবতা তাদের বিবৃতির সাথে মেলে না’।
এই ঘটনার কয়েক দিন আগে, যুক্তরাষ্ট্র এবং ফিলিপাইন ‘বালিকাতান’ (Balikatan) নামে পরিচিত তাদের বার্ষিক যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করেছে। এই মহড়ায় প্রথমবারের মতো বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অনুশীলন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
চীনের পক্ষ থেকে এই সামরিক মহড়াকে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে এবং এটিকে ফিলিপাইনের ‘বহিঃশক্তির সঙ্গে যোগসাজশ’ বলেও অভিহিত করা হয়েছে।
দক্ষিণ চীন সাগর একটি গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ, যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক সম্পদ, বিশেষ করে খনিজ তেল এবং গ্যাসের মজুদও বিভিন্ন দেশের মধ্যেকার বিরোধের কারণ।
চীন প্রায় পুরো দক্ষিণ চীন সাগরের উপর নিজেদের মালিকানা দাবি করে এবং এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোর দাবিকে অগ্রাহ্য করে থাকে।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই ধরনের ঘটনা দক্ষিণ চীন সাগরে উত্তেজনা আরও বাড়াতে পারে এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান