ধ্বংসস্তূপ থেকে ফিরে আসা: লিভারপুলের খেলোয়াড়দের রেটিং, কে সেরা?

লিভারপুলের প্রিমিয়ার লিগ জয়: খেলোয়াড়দের মূল্যায়ন। ফুটবল বিশ্বে লিভারপুলের নামটা এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো।

তাদের সমর্থক শুধু ইউরোপে নয়, সারা বিশ্বজুড়ে, এমনকি বাংলাদেশেও ছড়িয়ে আছে। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া প্রিমিয়ার লিগে জয়লাভ করে তারা আবারও প্রমাণ করেছে তাদের শ্রেষ্ঠত্ব।

আসুন, এই জয়ে দলের খেলোয়াড়দের অবদান এবং তাদের পারফরম্যান্সের মূল্যায়ন সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

গোলরক্ষক:

* **আলিসন:** অভিজ্ঞ এই ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক এখনো বিশ্বের সেরা কয়েকজনের একজন। তার ক্ষিপ্রতা এবং দৃঢ়তা দলের রক্ষণভাগে এনে দেয় অন্যরকম আত্মবিশ্বাস।

দুর্ভাগ্যবশত, ইনজুরির কারণে পুরো মৌসুমে তাকে বেশ কয়েকটি ম্যাচ মিস করতে হয়েছে। তার গড় পারফরম্যান্স ছিল ৮।

* **কুইভীন কেলেহার:** দলের নির্ভরযোগ্য বিকল্প গোলরক্ষক হিসেবে তিনি নিজেকে প্রমাণ করেছেন। সুযোগ পেলে ভালো খেলেন, তবে আলিসনের কারণে মূল একাদশে নিয়মিত সুযোগ পাওয়া তার জন্য কঠিন। তার খেলার মান ৭।

রক্ষণভাগ:

* **ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আর্নল্ড:** নতুন কোচের অধীনে খেলার ধরনে পরিবর্তন এনেছেন তিনি। রক্ষণভাগে তার দৃঢ়তা বেড়েছে, এবং আক্রমণভাগে ছিলেন আগের মতোই সৃষ্টিশীল।

মাঝে মাঝে তার পারফরম্যান্সে দুর্বলতা দেখা গেলেও, দলের জন্য তিনি গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। তার খেলার মান ৮।

* **কনার ব্র্যাডলি:** সুযোগ কম পেলেও, যখনই মাঠে নেমেছেন, নিজের জাত চিনিয়েছেন। আলেকজান্ডার-আর্নল্ড যদি অন্য কোনো ক্লাবে যোগ দেন, তাহলে সম্ভবত আগামী মৌসুমে নিয়মিত খেলতে দেখা যাবে তাকে। তার খেলার মান ৭।

* **ইব্রাহিম কোনাতে:** রক্ষণে তার গতি ছিল অসাধারণ। ভার্জিল ভ্যান ডাইকের সাথে মিলে তিনি তৈরি করেছিলেন অন্যতম শক্তিশালী রক্ষণ জুটি। তার খেলার মান ৮।

* **ভার্জিল ভ্যান ডাইক:** দলের অধিনায়ক হিসেবে পুরো মৌসুম জুড়েই ছিলেন অসাধারণ। তার নেতৃত্ব এবং খেলার ধরন ছিল দৃষ্টান্তমূলক। তার খেলার মান ১০।

* **জো গোমেজ:** দুর্ভাগ্যজনকভাবে, ইনজুরির কারণে পুরো মৌসুম সেভাবে খেলতে পারেননি। তবে দলের প্রয়োজনে বিভিন্ন স্থানে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। তার খেলার মান ৬।

* **জারেলা কুয়ানসা:** গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দলের হয়ে অবদান রেখেছেন। সুযোগ কম পেলেও, তার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। তার খেলার মান ৬।

* **অ্যান্ডি রবার্টসন:** ইনজুরির কারণে শুরুতে কিছু সমস্যা হলেও, পরে তিনি দারুণভাবে ফিরে আসেন। তার খেলার মান ৭।

* **কোস্টাস সিমিকাস:** রবার্টসনের অনুপস্থিতিতে ভালো খেলতে পারেননি, তবে সেট পিস থেকে তার অবদান ছিল প্রশংসনীয়। তার খেলার মান ৬।

মধ্যমাঠ:

* **রায়ান গ্র্যাভেনবার্খ:** মাঝমাঠে তার পজিশনিং, মুভমেন্ট এবং বল বিতরণের দক্ষতা ছিল অসাধারণ। নতুন কোচের অধীনে তিনি দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছিলেন। তার খেলার মান ৯।

* **অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার:** মাঝমাঠে তিনি ছিলেন খুবই নির্ভরযোগ্য এবং প্রভাবশালী। গ্র্যাভেনবার্খের সঙ্গে তার জুটি ছিল দারুণ। তার খেলার মান ৯।

* **ডোমিনিক সোবোসলাই:** গোল এবং অ্যাসিস্টের সংখ্যা বাড়িয়েছেন। তার কাজের মানসিকতা ছিল প্রশংসনীয়। তার খেলার মান ৮।

* **কার্টিস জোনস:** মাঠের খেলায় তার পরিণত মনোভাব ছিল প্রশংসনীয়। নিয়মিত শুরুর একাদশে সুযোগ না পেলেও, দলের জয়ে তার অবদান ছিল। তার খেলার মান ৮।

* **হার্ভে এলিয়ট:** সুযোগ কম পেলেও, যখনই খেলেছেন, ভালো পারফর্ম করেছেন। তার খেলার মান ৬।

* **ওয়াতারু এন্ডো:** পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নেমে দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তার খেলার মানসিকতা ছিল দৃষ্টান্তমূলক। তার খেলার মান ৭।

আক্রমণভাগ:

* **মোহাম্মদ সালাহ:** দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন এবং তার পারফরম্যান্স ছিল অসাধারণ। গোল এবং অ্যাসিস্টের সংখ্যায় তিনি ছিলেন সবার চেয়ে এগিয়ে। তার খেলার মান ১০।

* **লুইস দিয়াজ:** দলের আক্রমণভাগে গতি এনেছিলেন এবং গোল করার ক্ষেত্রেও ছিলেন সফল। তার খেলার মান ৮।

* **কোডি গাকপো:** নিয়মিত শুরুর সুযোগ পাওয়ার পর তিনি দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ গোল করেছেন। তার খেলার মান ৮।

* **ডিওগো জোটা:** ইনজুরির কারণে পুরো মৌসুম সেভাবে খেলতে পারেননি। তার খেলার মান ৬।

* **ডারউইন নুনেজ:** শুরুর একাদশে নিয়মিত সুযোগ পাননি, এবং তার খেলার ধরনে ধারাবাহিকতার অভাব ছিল। তার খেলার মান ৬।

* **ফেদেরিকো কিয়েসা:** এই খেলোয়াড়কে দলে ভেড়ানো হলেও, ইনজুরির কারণে তিনি খুব কম ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন। তার খেলার মান ৪।

লিভারপুলের এই জয় তাদের সমর্থকদের জন্য আনন্দের উপলক্ষ্য। খেলোয়াড়দের দৃঢ়তা, নতুন কোচের কৌশল এবং দলের সমন্বিত প্রচেষ্টা এই সাফল্যের মূল চাবিকাঠি ছিল।

ভবিষ্যতের জন্য দলটিকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে, খেলোয়াড়দের এই মূল্যায়ন নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *