ভ্যাঙ্কুভার শহরে একটি ফিলিপিনো ঐতিহ্য উৎসবে গাড়ির ধাক্কায় হতাহতের ঘটনার পর শোকস্তব্ধ সেখানকার প্রবাসী ফিলিপিনো সম্প্রদায়। শনিবারের এই মর্মান্তিক ঘটনায় নিহত হয়েছেন অনেকে, আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ।
উৎসবের আনন্দে মেতে ওঠার বদলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো কমিউনিটিতে।
কানাডার পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ভ্যাঙ্কুভারের একটি উৎসবের অনুষ্ঠানে এই ভয়াবহ ঘটনা ঘটে। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শোকাহত মানুষেরা একত্রিত হতে শুরু করেন।
রবিবার স্থানীয় সেন্ট মেরি দ্য ভার্জিন চার্চে নিহতদের আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ প্রার্থনা সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে কান্নার রোল ওঠে, অনেকে প্রিয়জনদের হারানোর বেদনায় ভেঙে পড়েন।
ফিলিপিনো সম্প্রদায়ের মানুষজন একে অপরের প্রতি সহমর্মিতা জানান এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোকে সান্ত্বনা দেন।
এই কঠিন সময়ে ভ্যাঙ্কুভারের ফিলিপিনো সম্প্রদায়ের মানুষজন ‘বাইয়ানিহান’ নামক একটি ঐতিহ্যবাহী ধারণার প্রতি আস্থা রাখছেন। ‘বাইয়ানিহান’ হলো ফিলিপিনো সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক, যেখানে সম্প্রদায়ের সকলে মিলে একে অপরের পাশে দাঁড়ায় এবং কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে।
এই ঘটনার পর সেখানকার মানুষজন একত্রিত হয়ে শোক প্রকাশ করেছেন এবং আহতদের সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এসেছেন। এই ঘটনা প্রমাণ করে, যেকোনো দুর্যোগে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করার মানসিকতা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই উৎসবটি ছিল ফিলিপিনো ঐতিহ্যের একটি উদযাপন, যেখানে তাদের সংস্কৃতি, খাদ্য এবং ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়।
এই উৎসবের দিনটি ফিলিপিনোদের কাছে ‘লাপু-লাপুর’ স্মরণেও গুরুত্বপূর্ণ। ১৫২১ সালে স্প্যানিশ ঔপনিবেশিকদের বিরুদ্ধে আদিবাসী ফিলিপিনোদের বিজয়ের প্রতীক হিসেবে দিনটি পালিত হয়।
ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে এবং আহতদের হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করে।
এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রীও। তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন।
ভ্যাঙ্কুভারের এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, শোকের সময়ে ঐক্যবদ্ধ থাকা এবং একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া কতটা জরুরি।
ফিলিপিনো সম্প্রদায়ের মানুষজন তাদের ঐতিহ্যবাহী ‘বাইয়ানিহান’ ধারণাকে সঙ্গে নিয়ে এই কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করছেন এবং শোক কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টা করছেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান