যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় ইয়েমেনে বন্দীশালায় মৃতের মিছিল!

ইয়েমেনে একটি কারাগারে মার্কিন বিমান হামলায় অন্তত ৬৮ জন নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। স্থানীয় হুতি বিদ্রোহীরা এই দাবি করেছে।

নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই আফ্রিকার অভিবাসী ছিল। সা’দা গভর্নোরেটে অবস্থিত এই কারাগারে হামলার বিষয়টি নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি যুক্তরাষ্ট্র।

সংবাদ সংস্থা সূত্রে জানা যায়, সা’দা গভর্নোরেট হুতি বিদ্রোহীদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। এই ঘটনার জেরে ইয়েমেনের দীর্ঘদিনের যুদ্ধের বিষয়টি আবারও সামনে এসেছে।

মূলত ইথিওপিয়া এবং অন্যান্য দেশ থেকে আসা লোকজন কাজের সন্ধানে প্রতিবেশী সৌদি আরবে যাওয়ার চেষ্টা করে। এই যাত্রাপথে তাদের অনেকেরই মৃত্যু হয়েছে।

মার্কিন সামরিক বাহিনী ‘অপারেশন রাফ রাইডার’-এর মাধ্যমে হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত এই অভিযানের বিস্তারিত কোনো তথ্য জানানো হয়নি।

তবে, মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড জানিয়েছে, তারা তাদের অভিযান সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য প্রকাশ করতে চায় না। তাদের মতে, ‘অপারেশনাল সুরক্ষার স্বার্থে’ তারা এই ধরনের গোপনীয়তা বজায় রাখে।

হুতিদের আল-মাসিরাহ স্যাটেলাইট নিউজ চ্যানেলে ঘটনার কিছু ছবি ও ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে দেখা গেছে, ধ্বংসস্তূপের মধ্যে মৃতদেহ এবং আহত ব্যক্তিদের সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।

হুতিদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলায় ১১৫ জন অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে। তবে, হতাহতের সংখ্যা সম্পর্কে এখনো পর্যন্ত স্বাধীনভাবে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

এই ঘটনার আগে, ২০২২ সালে একই স্থানে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলায় ৬৬ জন নিহত এবং ১১৩ জন আহত হয়েছিল। জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে জানা যায়, ওই সময় হুতি বিদ্রোহীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় ১৬ জন বন্দীকে গুলি করে হত্যা করে এবং আরও ৫০ জনকে আহত করে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের ঘটনাগুলো মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। ইয়েমেনের যুদ্ধ পরিস্থিতি সেখানকার সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত করে তুলেছে।

কাজের খোঁজে যারা অন্য দেশে পাড়ি জমাতে চায়, তাদের জন্য এই অঞ্চলটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উল্লেখ্য, হুতি বিদ্রোহীরা ইরানের সমর্থনপুষ্ট একটি গোষ্ঠী। তারা লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজের ওপর হামলা চালিয়েছে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধেও তাদের আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।

যুক্তরাষ্ট্র এই কারণে হুতিদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *