ইউরোপীয় উড়োজাহাজ প্রস্তুতকারক কোম্পানি এয়ারবাস, যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারোস্পেস সরবরাহকারী স্পিরিট অ্যারো সিস্টেমসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ কিনে নিচ্ছে। সম্প্রতি দুই কোম্পানির মধ্যে হওয়া একটি চুক্তির মাধ্যমে বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে।
এই চুক্তির ফলে স্পিরিট অ্যারো সিস্টেমস-এর কিছু অংশীদারিত্ব কিনছে এয়ারবাস। অন্যদিকে, মার্কিন উড়োজাহাজ প্রস্তুতকারক বোয়িংও স্পিরিট অ্যারো সিস্টেমস-এর কিছু অংশ অধিগ্রহণ করতে রাজি হয়েছে।
মূলত, এই চুক্তির মাধ্যমে এয়ারবাস এবং বোয়িং উভয়েই আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হওয়া স্পিরিট অ্যারো সিস্টেমসকে সাহায্য করতে চাইছে।
এই চুক্তির অংশ হিসেবে, এয়ারবাস স্পিরিটকে প্রায় ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (আনুমানিক ২,২০০ কোটি টাকা) ঋণ সহায়তা দেবে। অন্যদিকে, স্পিরিট এয়ারবাসকে ৪৩৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৪,৮৩০ কোটি টাকা) পরিশোধ করবে।
এই চুক্তির ফলে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনার কিনস্টন এবং যুক্তরাজ্যের বেলফাস্টে অবস্থিত স্পিরিটের দুটি প্রধান কারখানায় এয়ারবাস তাদের কার্যক্রম চালাবে।
কিনস্টন কারখানায় এ-350 মডেলের বিমানের গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ তৈরি করা হয়, আর বেলফাস্টে এ-220 মডেলের বিমানের কার্বন-ডানা তৈরি করা হয়।
বোয়িং এই অধিগ্রহণের অংশ হিসেবে স্পিরিট অ্যারো সিস্টেমস-এর কাছ থেকে ৪.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের (প্রায় ৫২,০০০ কোটি টাকা) শেয়ার কিনবে। বোয়িং এবং এয়ারবাসের মধ্যে হওয়া এই চুক্তির ফলে, স্কটল্যান্ডের প্রেসউইক-এর একটি কারখানার কিছু কাজ বোয়িংয়ের হাতে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
গত বছর, স্পিরিট অ্যারো সিস্টেমস তাদের আর্থিক দুর্বলতার কারণে টিকে থাকার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। জানা গেছে, তারা বর্তমানে প্রায় ৮৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৯,৮০০ কোটি টাকা) নগদ অর্থ ধরে রেখেছে।
তবে, ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে তাদের প্রায় ৬৫০ থেকে ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৭,২০০ কোটি টাকা) নগদ অর্থ ফুরিয়ে যেতে পারে।
এয়ারবাসের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা থমাস টোয়েপফার জানিয়েছেন, তারা এপ্রিল মাসের শেষ নাগাদ স্পিরিটের সঙ্গে এই চুক্তি সম্পন্ন করার আশা করছেন। আর বোয়িংয়ের সঙ্গে পুরো চুক্তিটি সম্ভবত চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে শেষ হবে।
এই চুক্তির ফলে বিশ্বজুড়ে বিমান চলাচলে ব্যবহৃত অত্যাধুনিক উড়োজাহাজগুলোর উৎপাদন এবং রক্ষণাবেক্ষণে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা।