যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে অস্থিরতা : যুক্তরাজ্যের বাজারে এর প্রভাব এবং বাংলাদেশিদের করণীয়।
বর্তমানে বিশ্বের অর্থনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারের একটি বিশেষ স্থান রয়েছে। বিভিন্ন কারণে প্রায়ই এই বাজারে উত্থান-পতন দেখা যায়, যা অনেক সময় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
সম্প্রতি, চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য যুদ্ধ এবং ফেডারেল রিজার্ভের প্রধানের পদ পরিবর্তনের গুঞ্জন এই অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। এমন পরিস্থিতিতে, যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, এই বাজারের ওঠা-নামা কি তাদের উদ্বেগের কারণ?
যুক্তরাজ্যের অনেক পেনশন স্কিম এবং বিনিয়োগের সঙ্গে সরাসরি বাIndirectlyভাবে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারের সম্পর্ক রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগকারীরা তাদের পোর্টফোলিও’র একটি উল্লেখযোগ্য অংশ, বিশেষ করে ৩৫ শতাংশ, বিনিয়োগ করে থাকেন মার্কিন শেয়ার বাজারে।
এই কারণে, যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারের পরিবর্তনগুলো যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগকারীদের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। যাদের পেনশনের টাকা বিভিন্ন ফান্ডে জমা আছে, তাদের ক্ষেত্রেও এই বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বল্প মেয়াদে বাজারের অস্থিরতা নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। শেয়ার বাজার একটি নির্দিষ্ট সময় পর আবার ঘুরে দাঁড়ায়।
তাই, হুট করে বিনিয়োগ বন্ধ করা বা কৌশল পরিবর্তন করা উচিত নয়। যদি কেউ কয়েক বছর পরেই অবসর নিতে চান, তাহলে বাজারের এই পরিস্থিতিতে পেনশন বা Annuity (বার্ষিক বৃত্তি)-এর অর্থ তোলার বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
এমন পরিস্থিতিতে অবসর গ্রহণের পরিকল্পনা কয়েক মাস পিছিয়ে দেওয়ারও সুযোগ রয়েছে।
যুক্তরাজ্যের কিছু পেনশন স্কিম তাদের বিনিয়োগকারীদের জন্য বাজারের পরিস্থিতি অনুযায়ী ঝুঁকি কমায়। তারা শেয়ার বাজার থেকে সরে এসে বন্ড বা নগদ অর্থের দিকে ঝুঁকতে পারে, যা অবসরকালে একটি স্থিতিশীল আয়ের নিশ্চয়তা দিতে পারে।
এছাড়া, ডেফিন্ড বেনিফিট স্কিম-এর অধীনে যারা পেনশন পান, তাদের তেমন উদ্বেগের কারণ নেই। কারণ, এই স্কিমগুলোতে সাধারণত কোম্পানিগুলো তাদের কর্মীদের পেনশনের নিশ্চয়তা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারের এই অস্থিরতার একটি ইতিবাচক দিকও রয়েছে। ডলারের দর পতনের কারণে যারা যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণে যেতে চান, তারা হয়তো কিছুটা সুবিধা পেতে পারেন।
তবে, ইউরোপে ভ্রমণ করতে গেলে বিনিময় হারে ভিন্নতা দেখা যেতে পারে। তাই ভ্রমণের আগে টাকার বিনিময় হার সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নেওয়া প্রয়োজন।
এই পরিস্থিতিতে, বিনিয়োগকারীদের জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেওয়া খুবই জরুরি। যদি বিনিয়োগ নিয়ে কোনো দ্বিধা থাকে, তবে একজন অভিজ্ঞ আর্থিক উপদেষ্টার পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।
এছাড়া, যুক্তরাজ্যের পেনশন বিষয়ক পরামর্শ কেন্দ্রগুলোও বিনামূল্যে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকে।
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ একটি জটিল বিষয়। বাজারের পরিস্থিতি সব সময় একরকম থাকে না।
তাই, সব ধরনের ঝুঁকি এবং সুযোগ সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া প্রত্যেক বিনিয়োগকারীর জন্য জরুরি।
তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ প্রতিবেদন