চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে সম্প্রতি কোনো ফোনালাপ হয়নি। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সোমবার এই কথা জানান।
এর মাধ্যমে, বাণিজ্য নিয়ে চলা টানাপোড়েন কমাতে দুই দেশের মধ্যে আলোচনার জন্য ট্রাম্পের আগ্রহের দাবিকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সিএনএন-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত সপ্তাহে টাইম ম্যাগাজিনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, শি জিনপিং তাকে ফোন করেছিলেন।
এর প্রতিক্রিয়ায় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কুও জিয়াকুন এক নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমার জানা মতে, দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে সম্প্রতি কোনো ফোনালাপ হয়নি।
আমি আবারও বলতে চাই, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুল্কের বিষয়টি নিয়ে কোনো আলোচনা বা সমঝোতা হচ্ছে না।”
চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ দীর্ঘদিনের। উভয় দেশই একে অপরের পণ্যের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করেছে।
ট্রাম্প অবশ্য সম্প্রতি সুর নরম করে জানান, চীনের পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক কমানো হবে।
একইসঙ্গে, তিনি আলোচনার টেবিলে ‘খুব ভালো’ ব্যবহারের প্রতিশ্রুতি দেন, যাতে শি জিনপিং আলোচনা শুরু করতে রাজি হন।
তবে, ট্রাম্পের এই নরম সুরের পরেও চীন তাদের আগের অবস্থানেই অনড় রয়েছে।
তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি শুল্ক সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে।
ট্রাম্প বারবার শি জিনপিংকে ‘বন্ধু’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, কিন্তু ওই ফোনালাপের বিষয়বস্তু বা সময় সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, দুই নেতার মধ্যে সবশেষ ফোনালাপ হয়েছিল গত বছরের ১৭ই জানুয়ারী, যা ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের দায়িত্বগ্রহণের কয়েক দিন আগের ঘটনা।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ট্রাম্প সিএনএন-কে জানান, তিনি বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চান না, তবে তিনি এর আগে অনেকবার শি জিনপিংয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন।
এদিকে, বাণিজ্য যুদ্ধের উত্তাপ কমাতে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে চীনের কর্মকর্তাদের আলোচনার খবর শোনা গেলেও, বেইজিং বরাবরই তা অস্বীকার করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র চীনের কাছ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেছে।
যদিও স্মার্টফোন ও কম্পিউটারের মতো কিছু ইলেক্ট্রনিক পণ্যের ক্ষেত্রে এই শুল্ক শিথিল করা হয়েছে।
চীনও যুক্তরাষ্ট্রের থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বৃদ্ধি করেছে।
তবে তারা তাদের প্রযুক্তি শিল্পের ওপর বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব কমাতে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু সেমিকন্ডাক্টর পণ্যের ওপর শুল্ক কমিয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের এই বাণিজ্য যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলছে।
এর ফলস্বরূপ, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাণিজ্য, সরবরাহ ব্যবস্থা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কেও পরিবর্তন আসছে।
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোও এই পরিস্থিতির ওপর গভীর নজর রাখছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন