শিরোনাম: হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের আইনি লড়াই, বিতর্কের কেন্দ্রে গবেষণা তহবিল
যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রাচীন এবং শীর্ষস্থানীয় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যে ফেডারেল তহবিল কর্তন নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ আইনি লড়াই শুরু হয়েছে। এই মামলার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে ফেডারেল সরকারের দেওয়া ২.২ বিলিয়ন ডলারের অনুদান বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত।
এই সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে ট্রাম্প প্রশাসন জানাচ্ছে যে, হার্ভার্ডে ইহুদিবিদ্বেষ (Anti-Semitism) মোকাবিলায় কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ছিল। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং এটিকে একাডেমিক স্বাধীনতা খর্ব করার অপচেষ্টা হিসেবে দেখছে। এই ঘটনার সূত্র ধরে, কিভাবে একটি দেশের সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে, তা নিয়ে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
মামলার শুনানিতে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, সরকারের এই পদক্ষেপ তাদের ‘সংবিধানের প্রথম সংশোধনী নীতির’ পরিপন্থী। এছাড়াও, তারা প্রশাসনিক কার্যক্রম বিষয়ক একটি পুরনো আইন (Administrative Procedure Act – APA) লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে। এই আইনে বলা হয়েছে, কোনো সরকারি সংস্থা হুট করে তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে পারে না এবং কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, ফেডারেল সরকার সাধারণত গবেষণা ও উন্নয়নমূলক কাজের জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুদান দিয়ে থাকে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবীরা বলছেন, সরকারের এমন পদক্ষেপের ফলে গবেষণা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে দ্রুত শুনানির আবেদন করা হয়েছে, যাতে গবেষণা খাতে অর্থ সরবরাহ অব্যাহত রাখা যায়।
এই মামলায় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে লড়ছেন খ্যাতিমান আইনজীবী রবার্ট হার এবং উইলিয়াম বার্ক। তাঁদের নিয়োগের কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে, ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো যেতে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই মামলাটি শুধু হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয় নয়, বরং এর চেয়ে অনেক বড় কিছু জড়িত রয়েছে। এটি মূলত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের অধিকার এবং সরকারের ক্ষমতা প্রয়োগের সীমা সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে। এই মামলার রায় ভবিষ্যতে শিক্ষাব্যবস্থা এবং গবেষণা খাতে সরকারের নীতি নির্ধারণে প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন