মহাকাশ যুদ্ধের জগৎ: কেন ইয়োদা উল্টো কথা বলেন?
বিখ্যাত চলচ্চিত্র ‘স্টার ওয়ার্স’-এর স্রষ্টা জর্জ লুকাস সম্প্রতি দর্শকদের সঙ্গে এই সিনেমার অন্যতম জনপ্রিয় চরিত্র ইয়োদার কথা বলার ধরন নিয়ে মুখ খুলেছেন। গত বছর, ২০২৫ সালের ২৪শে এপ্রিল, টিসিএম ক্লাসিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘দ্য এম্পায়ার স্ট্রাইকস ব্যাক’ সিনেমার ৪৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এই বিষয়ে আলোকপাত করেন।
লুকাস ব্যাখ্যা করেন, ইয়োদা কেন এমনভাবে কথা বলেন। তাঁর মতে, “যদি সে সাধারণ ইংরেজিতে কথা বলত, তবে মানুষ সেভাবে মনোযোগ দিত না। কিন্তু তার যদি একটি আলাদা টান থাকত, অথবা তার কথা বুঝতে যদি একটু অসুবিধা হত, তবে তারা তার কথাগুলোর উপর বেশি মনোযোগ দিত।” ইয়োদা ছিলেন মূলত সিনেমার দার্শনিক চরিত্র, তাই লুকাস চেয়েছিলেন দর্শকরা, বিশেষ করে ছোটরা, তাঁর কথাগুলো মন দিয়ে শুনুক।
ইয়োদার বিখ্যাত কিছু উক্তি এখনো সিনেমাপ্রেমীদের মনে গেঁথে আছে, যেমন: “শিখতে এখনো অনেক বাকি”, অথবা “ধৈর্য্য ধরতে হবে, আমার তরুণ শিষ্য।”
১৯৮০ সালের ‘দ্য এম্পায়ার স্ট্রাইকস ব্যাক’ ছবিতে ইয়োদার চরিত্রে কণ্ঠ এবং চরিত্র রূপদান করেছেন ফ্র্যাঙ্ক ওজ। ১৯৮৩ সালের ‘রিটার্ন অফ দ্য জেডি’ সিনেমাতেও তিনি একই ভূমিকা পালন করেন।
অনুষ্ঠানে লুকাস আরও জানান, কিভাবে তিনি এই সিনেমার স্বত্ব নিজের কাছে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “আমি শুরুতে রাজি হয়েছিলাম, লিখে, পরিচালনা করে এবং প্রযোজনা করে দেব, মাত্র ৫০,০০০ ডলারে। তবে আমি চেয়েছিলাম সিক্যুয়েলের অধিকার। আমি জানতাম, যা-ই হোক না কেন, আমি এই সিনেমাগুলো বানাবোই।”
তাঁর আরেকটি শর্ত ছিল, “আমি লাইসেন্সিং চাই।” এই কথা শুনে প্রযোজনা সংস্থার লোকজন প্রথমে অবাক হয়েছিল। তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বলেছিল, “এটা তো সম্ভব নয়। খেলনা বা অন্য কিছু তৈরি করতে তাদের এক বিলিয়ন ডলার এবং এক বছর সময় লাগে। এতে কোনো লাভ নেই।”
জর্জ লুকাস ১৯৭৭ সালের ‘এ নিউ হোপ’ সিনেমা দিয়ে ‘স্টার ওয়ার্স’ তৈরি করা শুরু করেন এবং ২০১২ সালে তিনি তাঁর সংস্থা, লুকাসফিল্ম এবং ‘স্টার ওয়ার্স’-এর স্বত্ব ডিজনি-র কাছে বিক্রি করেন।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে লুকাসকে সম্মানসূচক ‘পাম ডি’অর’ প্রদান করা হয়। তাঁর দীর্ঘদিনের বন্ধু এবং কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলা এই পুরস্কার তাঁর হাতে তুলে দেন।
তথ্য সূত্র: পিপল