যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনে মার্কিন বিমান হামলায় একটি অভিবাসন কেন্দ্রে ভয়াবহ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
সা’দা প্রদেশে, যা হুতি বিদ্রোহীদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত, সেখানে চালানো এই হামলায় অন্তত ৬৮ জন নিহত এবং ৪৭ জন আহত হয়েছে।
আল জাজিরার খবরে জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন ইথিওপিয়াসহ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অভিবাসী, যারা কাজের সন্ধানে ইয়েমেন হয়ে সৌদি আরবে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
ইয়েমেনে দীর্ঘদিন ধরে চলা এই সংঘাতের মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই হামলাটি বিশেষভাবে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক কার্যক্রম পরিচালনাকারী মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড (CENTCOM) এই হামলার বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে রাজি হয়নি, তবে তারা স্বীকার করেছে যে, মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে ইয়েমেনে তারা আটশ’র বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে।
এই সময়ের মধ্যে, সবমিলিয়ে আড়াইশ’র বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
হুতি নিয়ন্ত্রিত আল-মাসিরাহ টিভি চ্যানেলে প্রচারিত ছবিতে ধ্বংসস্তূপের নিচে মরদেহ এবং আহতদের উদ্ধারের দৃশ্য দেখা গেছে।
হুতি পরিচালিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলার আগে ওই কেন্দ্রে প্রায় ১১৫ জন অভিবাসীকে আটক করে রাখা হয়েছিল।
প্রতি বছর, হাজার হাজার অভিবাসী আফ্রিকার শিং থেকে আসা বিপজ্জনক পথ বেছে নেয়, যা তাদের লোহিত সাগর পাড়ি দিয়ে উপসাগরীয় অঞ্চলে নিয়ে যায়।
তারা মূলত সৌদি আরব এবং অন্যান্য উপসাগরীয় দেশে শ্রমিক বা গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করার আশা নিয়ে আসে।
কিন্তু তাদের এই যাত্রা মোটেই সহজ নয়।
যুদ্ধের কারণে বিধ্বস্ত ইয়েমেনের পথ তাদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
হুতি বিদ্রোহীরা অভিবাসীদের আটক ও নির্যাতনের জন্য অভিযুক্ত এবং তাদের সীমান্ত পাড়ি দিতে সহায়তা করার বিনিময়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করে থাকে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে, অভিবাসন প্রত্যাশীদের জীবনযাত্রা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
অন্যদিকে যেমন তাদের বন্দী হওয়ার এবং নির্যাতনের শিকার হওয়ার ঝুঁকি থাকে, তেমনই দীর্ঘদিনের সংঘাত তাদের জীবনকে আরও অনিশ্চিত করে তুলেছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।