কানাডার নির্বাচন: ট্রাম্পের হুমকি, কার জয়?

কানাডায় আসন্ন নির্বাচন: কী হতে পারে, কেমন সম্ভাবনা?

কানাডার আসন্ন সাধারণ নির্বাচন নিয়ে এখন কানাডা জুড়ে চলছে আলোচনা। দেশটির ইতিহাসে ৪৫তম এই নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন দেশটির প্রায় ২ কোটি ৯০ লাখ ভোটার। নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে চলছে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই।

এবারের নির্বাচনে মূল বিষয়গুলো হলো- অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক এবং দেশের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সমস্যা।

কানাডার সরকার ব্যবস্থা একটি সংসদীয় গণতন্ত্রের ওপর ভিত্তি করে গঠিত। এখানকার নাগরিকরা তাদের স্থানীয় সংসদ সদস্য (Member of Parliament – MP) নির্বাচন করেন, যা বাংলাদেশের সংসদ সদস্য নির্বাচনের মতোই। যে দল সরকার গঠন করে, সেই দলের প্রধান হন প্রধানমন্ত্রী। নির্বাচনে জয়লাভের জন্য একটি দলকে কমপক্ষে ১৭২ জন সংসদ সদস্যের সমর্থন পেতে হয়।

বর্তমানে, কানাডার প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো হলো: লিবারেল পার্টি, কনজারভেটিভ পার্টি, নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি), এবং ব্লকের কুইবেকইস। নির্বাচনের আগে বিভিন্ন জনমত জরিপে দলগুলোর অবস্থান কিছুটা পরিবর্তিত হচ্ছে।

নির্বাচনের আগে পর্যন্ত কনজারভেটিভ পার্টি এগিয়ে ছিল, তবে শেষ মুহূর্তে লিবারেল পার্টির জনপ্রিয়তা বেড়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের পর নতুন নেতা মার্ক কার্নের আগমন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক বিষয়ক উদ্বেগের কারণে ভোটের হিসাব পাল্টে যেতে পারে। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কানাডার প্রতি আগ্রাসী মনোভাব অনেক ভোটারের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অর্থনৈতিক দিক থেকেও কানাডা বেশ স্থিতিশীল। দেশটির জিডিপি বিশ্বের শীর্ষ ১৫টির মধ্যে একটি এবং মুদ্রাস্ফীতিও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং চাকরির সুযোগ কমে যাওয়ায় অনেক কানাডিয়ান নাগরিকের জীবনযাত্রায় প্রভাব পড়েছে।

এছাড়া, স্বাস্থ্যখাতে সুযোগের অভাব এবং দীর্ঘ অপেক্ষার কারণে অনেককে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

কানাডার নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয় স্থানীয় সময় অনুযায়ী বিভিন্ন প্রদেশে। ভোট গণনা শুরু হবে ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই। নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল সাধারণত নির্বাচনের প্রায় ছয় মাস পর ঘোষণা করা হয়।

অতীতে কানাডার নির্বাচনগুলোতে ভোটারদের অংশগ্রহণে ভিন্নতা দেখা গেছে। ১৯৫৮ সালের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ৭৯.৪ শতাংশ ভোট পড়েছিল, যেখানে ২০১১ সালের নির্বাচনে সর্বনিম্ন ৫৮.৫ শতাংশ ভোট পড়েছিল।

ধারণা করা হচ্ছে, এবারের নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ আগের তুলনায় বেশি হতে পারে।

কানাডার এই নির্বাচন শুধু দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোর সমাধান করবে না, বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও এর প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশটির সম্পর্ক কেমন হবে, সেদিকে সবার নজর থাকবে।

তথ্যসূত্র: আল জাজিরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *