যুদ্ধ বন্ধ! মে মাসে ইউক্রেনে ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা পুতিনের!

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে আসন্ন মে মাসে ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিজয়ের ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আগামী ৮ই মে থেকে ১০ই মে পর্যন্ত এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।

ক্রেমলিন এক বিবৃতিতে ইউক্রেনকেও এই যুদ্ধবিরতিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “এই সময়ের মধ্যে সকল প্রকার সামরিক কার্যক্রম স্থগিত করা হবে।” একইসঙ্গে রাশিয়া মনে করে ইউক্রেনও এই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করবে।

যদি ইউক্রেন এই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে, তাহলে রুশ সশস্ত্র বাহিনী ‘যথাযথ এবং কার্যকর’ জবাব দেবে বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। রাশিয়া জানিয়েছে, তারা এই সংঘাতের মূল কারণগুলো সমাধানে আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে কাজ করতে প্রস্তুত।

রাশিয়ার পক্ষ থেকে এর কারণ হিসেবে ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানের বিরোধিতা, দেশটির সামরিক শক্তির সীমাবদ্ধতা এবং অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের মতো বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে।

এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলে, ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় রুশ অভিযান শুরুর পর এটিই হবে প্রথম পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতি। তবে এই সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবনা থেকে বোঝা যায়, বৃহত্তর শান্তি চুক্তির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টা এখনো ফলপ্রসূ হয়নি।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ৩০ দিনের জন্য যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাব দিলেও রাশিয়া তা প্রত্যাখ্যান করে। যদিও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই প্রস্তাব গ্রহণ করেছিলেন।

এর আগে ইস্টার উৎসবে উভয় পক্ষই আংশিক যুদ্ধবিরতি চেয়েছিল, কিন্তু একে অপরের বিরুদ্ধে তা লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে। এরপর থেকে রাশিয়া ইউক্রেনীয় শহরগুলোতে হামলা অব্যাহত রেখেছে, যার ফলে বহু বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।

পুতিনের যুদ্ধবিরতি ঘোষণার প্রেক্ষাপটে ইউক্রেনে রাশিয়ার অব্যাহত হামলার উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অসন্তুষ্টি বাড়ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি রাশিয়াকে ইউক্রেনে হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, ‘আমি খুবই হতাশ যে রাশিয়া ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। আমি চাই পুতিন যুদ্ধ বন্ধ করুন, আলোচনা টেবিলে বসুন এবং একটি চুক্তি করুন।’

যদিও ট্রাম্প বারবার দাবি করেছেন যে তিনি এই যুদ্ধ বন্ধের কাছাকাছি পৌঁছেছেন, কিন্তু রাশিয়া কঠিন শর্ত জুড়ে দেওয়ায় তার প্রচেষ্টা তেমন ফলপ্রসূ হয়নি।

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, রাশিয়া ক্রিমিয়া এবং ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝিয়া অঞ্চলের উপর তাদের নিয়ন্ত্রণ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার শর্তে শান্তি আলোচনা করতে চায়।

৯ই মে ‘বিজয় দিবস’ উপলক্ষে রাশিয়া তাদের সামরিক শক্তি প্রদর্শন করে থাকে। এই দিনে তারা ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিজয়ের উদযাপন করে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *