মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিলওয়াকি শহরে পুরোনো স্কুলগুলোতে সীসা দূষণের কারণে নতুন করে আরও দুটি স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে শিশুদের স্বাস্থ্য নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
জানা গেছে, চলতি বছর এরই মধ্যে চারজন শিক্ষার্থীর শরীরে সীসার মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পাওয়া গেছে।
মিলওয়াকি শহরের স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শহরের পুরনো ভবনগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা ক্ষয়ে যাওয়া রং থেকেই মূলত এই দূষণ ছড়াচ্ছে। ১৯78 সালের আগে তৈরি হওয়া ভবনগুলোতে সীসা মিশ্রিত রং ব্যবহার করা হত, যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
স্কুলগুলি এখন প্রায় একশ’টি পুরনো ভবনের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছে। এই কাজটি তারা গ্রীষ্মকাল পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা প্রতিটি ভবনের অবস্থা বিবেচনা করে সেগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করবে। এরপর ঝুঁকির মাত্রা অনুযায়ী স্কুলগুলোয় সীসা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে এবং প্রয়োজনে আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এছাড়া, যারা স্কুলে কাজ করেন, যেমন – শিক্ষক ও কর্মচারী, তাদেরও স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
শিশুদের শরীরে সীসার সংক্রমণ পরীক্ষা করার জন্য শহর কর্তৃপক্ষ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (Centers for Disease Control and Prevention – CDC)-এর সাহায্য চেয়েছিল। কিন্তু সেই আবেদন তারা পায়নি।
সিডিসি’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের কাছে বর্তমানে এই বিষয়ে পর্যাপ্ত বিশেষজ্ঞ নেই। এই পরিস্থিতিতে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর ট্যামি বাल्डউইন এবং কংগ্রেসওম্যান গ্ওয়েন মুর, স্বাস্থ্য ও মানব সেবা বিভাগের সেক্রেটারি রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়রের কাছে সিডিসি’র বিশেষজ্ঞদের পুনর্বহাল করার জন্য একটি চিঠি লিখেছেন।
চিঠিতে তারা বলেছেন, “এই সমস্যা সমাধানের জন্য আপনার দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।”
মিলওয়াকির এই সংকট নতুন নয়। এখানকার পুরনো বাড়িগুলোর কারণে এখানে দীর্ঘদিন ধরেই সীসা দূষণের সমস্যা রয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে শহরের উত্তর দিকের প্রায় প্রতি পাঁচ জন শিশুর মধ্যে একজনের শরীরে সীসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
তবে, শিশুদের মধ্যে এমন দূষণ আগে কখনো স্কুলের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল না।
জানা গেছে, এই সমস্যার সমাধানে স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রায় ২৬৫ মিলিয়ন ডলার (১ ডলার = ১১০ টাকা ধরে হিসাব করলে ২৯,১৫০,০০০,০০০/- টাকা) রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ব্যয় করতে চাইছে।
শিশুদের শরীরে সীসার সংক্রমণ পরীক্ষা করার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের প্রতি তাদের সন্তানদের ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। এছাড়া, স্কুলগুলোতেও পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
আগামী ৭ই মে এই ধরনের একটি স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন