ইউগো: অদ্ভুত গাড়িতে সার্বিয়ার পথে! যা দেখেছেন সবাই!

শিরোনাম: ইতিহাসের ‘সবচেয়ে খারাপ’ গাড়ি চড়ে সার্বিয়ার পথে: যুগোস্লাভিয়ার স্মৃতি আর আধুনিকতার মেলবন্ধন

সারা বিশ্বে যখন পুরনো দিনের স্মৃতিচারণা একটি নতুন আগ্রহ তৈরি করেছে, তখন সার্বিয়ার পথে এক বিশেষ অভিজ্ঞতা ভ্রমণকারীদের মন জয় করছে।

‘যুু্‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍গো’ গাড়ি, যা একসময় ‘ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ গাড়ি’ হিসেবে পরিচিত ছিল, সেই গাড়িতে চড়ে পুরনো যুগোস্লাভিয়ার স্মৃতিচিহ্নগুলি ঘুরে দেখার সুযোগ করে দিচ্ছে ‘ইউগোভার্স’ নামের একটি সংস্থা।

**পুরনো দিনের নস্টালজিয়া: যুগোর হাত ধরে সার্বিয়ার পথে**

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুগোস্লাভিয়াতে নির্মিত ‘যুু্‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍গো’ গাড়ি একসময় সাধারণ মানুষের কাছে ছিল অত্যন্ত প্রিয়।

বর্তমানে, এই গাড়ির নস্টালজিয়াকে কাজে লাগিয়ে, পর্যটকদের জন্য বেলগ্রেড এবং সার্বিয়ার বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এই ভ্রমণের মূল আকর্ষণ হল, পুরনো দিনের ‘যুু্‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍গো’ গাড়িতে চড়ে ভ্রমণ করা।

বেলগ্রেডের রাস্তায়, এই ‘যুু্‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍গো’ গাড়ির চালক ভয়েইন জিউগিকের সাথে পুরনো দিনের স্মৃতিচারণ করতে করতে পর্যটকেরা শহরের বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থানে যান।

ঠান্ডা যুদ্ধের সময়কার স্থাপত্যশৈলী, যেমন – অত্যাশ্চর্য সেতু এবং ভবনগুলি আজও আকর্ষণীয়।

এই ভ্রমণের সময়, পর্যটকদের চোখে পরে কমিউনিস্ট যুগের স্মৃতিবিজড়িত স্থানগুলো।

**ঐতিহাসিক স্থাপত্য ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য**

সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে, ‘ইউগোভার্স’ -এর এই ভ্রমণের মূল আকর্ষণ হলো যুগোস্লাভিয়া আমলের স্থাপত্য এবং সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হওয়া।

পুরনো দিনের ব্রিজ, আধুনিক স্থাপত্যের নিদর্শন – সবকিছুই যেন সময়ের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে।

এই সফরে, পর্যটকেরা আধুনিকতার ছোঁয়াও খুঁজে পান – যেমন, অত্যাধুনিক ‘জেনেক্স টাওয়ার’। এই টাওয়ারের ১৪০ মিটার উঁচু থেকে পুরো শহরের দৃশ্য দেখা যায়।

শুধু স্থাপত্যই নয়, এই ভ্রমণের মাধ্যমে সার্বিয়ার সংস্কৃতি, স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রা এবং তাদের ঐতিহ্য সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যায়।

**পুরাতন গাড়ির প্রতি ভালোবাসা: প্রজন্মের পর প্রজন্ম**

‘যুু্‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍গো’ গাড়ির প্রতি ভালোবাসা যেন প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসছে।

একটা সময় এই গাড়িগুলো রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে প্রায় বিলুপ্তির পথে ছিল।

কিন্তু বর্তমানে, তরুণ প্রজন্মের আগ্রহের কারণে, পুরনো গাড়িগুলিকে নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে এবং তাদের রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে।

স্থানীয় মেকানিক জোভানা নিনকোভিচ-এর নেতৃত্বে প্রায় ৫০ জন উৎসাহী মানুষের একটি দল এই কাজটি করে।

তারা পুরনো গাড়ি সংগ্রহ করে, সেগুলির মেরামত করে এবং বিভিন্ন র‍্যালিতে অংশ নেয়।

এই প্রসঙ্গে, বাংলাদেশের পুরাতন গাড়ি এবং ঐতিহ্য রক্ষার বিষয়গুলিও মনে আসে।

বাংলাদেশেও পুরনো দিনের গাড়ি এবং ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য রক্ষার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

**সার্বিয়ার গ্রামীন পথে: প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যাওয়া**

বেলগ্রেডের বাইরে, পর্যটকেরা মাগলিক ক্যাসেলে ভ্রমণ করেন।

ত্রয়োদশ শতাব্দীতে নির্মিত এই দুর্গটি মঙ্গোল আক্রমণের প্রতিরোধের জন্য তৈরি করা হয়েছিল।

এখানকার স্থানীয় তরুণদের একটি দল দুর্গটি পুনরুদ্ধারের কাজ করছে।

এখানকার পরিবেশ যেন যুগোস্লাভিয়া আমলের কথা মনে করিয়ে দেয়, যেখানে বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো, গান শোনা এবং স্থানীয় খাবার – সবই ছিল আনন্দের অংশ।

সার্বিয়ার গ্রামীন পথে, এই ‘যুু্‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍গো’ গাড়ি পাহাড়ী পথে ছুটে চলে।

এখানকার মানুষের আন্তরিকতা, প্রকৃতির অপরূপ দৃশ্য – সব মিলিয়ে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা তৈরি হয়।

এই সময়ে, এখানকার স্থানীয় খাবার, যেমন – সসেজ, আচার এবং ডাল-এর স্বাদ ভ্রমণকারীদের মন জয় করে।

**ভ্রমণের খরচ এবং উপলব্ধতা**

‘ইউগোভার্স’-এর মাধ্যমে বেলগ্রেডে এই ধরনের ভ্রমণের খরচ জনপ্রতি প্রায় ৬,০০০ টাকার (৬৫ ইউরোর সমান) মতো।

এছাড়া, মাগলিকগ্রাদেও থাকার ব্যবস্থা রয়েছে, যেখানে জনপ্রতি প্রায় ৪,০০০ টাকা (৪৫ ইউরোর সমান) থেকে শুরু করে ৭ জনের জন্য প্রায় ৭,৫০০ টাকা (৮০ ইউরোর সমান) খরচ হতে পারে।

সার্বিয়ার এই ‘যুু্‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍গো’ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা, পুরনো দিনের নস্টালজিয়া এবং আধুনিকতার এক দারুণ মিশ্রণ, যা ভ্রমণকারীদের জন্য এক অনন্য সুযোগ।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *