হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমাতে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রায় পরিবর্তনের পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকরা। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণা জানাচ্ছে, শ্যাম্পেন পান করলে আকস্মিক হৃদরোগের ঝুঁকি কিছুটা কমতে পারে।
তবে, এর সঙ্গে আরও কিছু বিষয় জড়িত রয়েছে, যা হৃদরোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে, শ্যাম্পেন ও সাদা ওয়াইন পান করা, বেশি ফল খাওয়া, ইতিবাচক মানসিকতা বজায় রাখা, স্বাস্থ্যকর ওজন এবং নিয়ন্ত্রিত রক্তচাপের মতো বিষয়গুলো হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক হতে পারে।
চীনের ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক রেনজি চেন এবং তাঁর দল এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন।
তাঁদের মতে, জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনে আকস্মিক হৃদরোগের (SCA) ৪০ থেকে ৬৩ শতাংশ পর্যন্ত ঝুঁকি কমানো সম্ভব।
হঠাৎ হৃদরোগ আসলে কী? যখন হৃদপিণ্ড রক্ত সরবরাহ বন্ধ করে দেয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসা না পেলে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে, তখন তাকে আকস্মিক হৃদরোগ বলা হয়।
এটি হৃদপিণ্ডের বৈদ্যুতিক সিস্টেমে গোলযোগের কারণে হয়ে থাকে।
এই গবেষণার জন্য যুক্তরাজ্যের বায়োব্যাঙ্ক থেকে সংগৃহীত তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে, যেখানে প্রায় ৫ লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য ছিল।
১৪ বছর ধরে চলা এই গবেষণায় ৩,১৪৭ জন আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
গবেষকরা বলছেন, জীবনযাত্রার পরিবর্তনের মাধ্যমে এই রোগের ঝুঁকি কমানো যেতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, ধূমপান ত্যাগ করা, স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা, নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জীবন যাপন করা ইত্যাদি হৃদরোগ প্রতিরোধের গুরুত্বপূর্ণ উপায়।
গবেষণায় শ্যাম্পেন ও সাদা ওয়াইন পানের কথা বলা হলেও, হৃদরোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে এটি একমাত্র উপায় নয়।
ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশন জানাচ্ছে, আকস্মিক হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে হলে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা জরুরি।
এর মধ্যে রয়েছে—অ্যালকোহল গ্রহণ কমানো, ধূমপান ত্যাগ করা, স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা, নিয়মিত ওষুধ সেবন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা।
গবেষকরা বলছেন, জীবনযাত্রার এই পরিবর্তনগুলো হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
তবে, এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত গবেষণা প্রয়োজন।
তাই, হৃদরোগ থেকে বাঁচতে হলে স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা বেছে নেওয়ার পাশাপাশি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
তথ্য সূত্র: The Guardian