পোষা প্রাণীর বর্জ্য: পরিবেশ-বান্ধব সমাধান কি সত্যিই আছে?
বর্তমানে, বাংলাদেশের শহরগুলোতে পোষা প্রাণীর সংখ্যা বাড়ছে, বিশেষ করে কুকুর একটি জনপ্রিয় সঙ্গী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এই পরিস্থিতিতে, তাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
অন্যদিকে যেমন শহরের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা জরুরি, তেমনই পরিবেশের উপর এর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো দরকার।
কুকুরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সাধারণত প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এই সাধারণ পদ্ধতি পরিবেশের জন্য কতটা উপযোগী, তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে।
বাজারে এখন পরিবেশ-বান্ধব হিসেবে পরিচিত কিছু ব্যাগ পাওয়া যায়, যেগুলি বায়োডিগ্রেডেবল বা কম্পোস্টেবল হওয়ার দাবি করে। এগুলো ভুট্টা বা অন্য কোনো উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়।
কিন্তু সত্যিই কি এগুলো প্লাস্টিকের ব্যাগের চেয়ে ভালো?
প্লাস্টিকের ব্যাগগুলি সহজে পচে না এবং বছরের পর বছর ধরে ল্যান্ডফিলে থেকে যায়, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। অন্যদিকে, বায়োডিগ্রেডেবল ব্যাগগুলি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে পচে যেতে পারে, কিন্তু ল্যান্ডফিলে গেলে তাদের পক্ষে ভালোভাবে পচন সম্ভব হয় না।
এছাড়া, এই ধরনের ব্যাগ তৈরি করতেও অনেক শক্তি এবং সম্পদের প্রয়োজন হয়, যা পরিবেশের উপর একটি প্রভাব ফেলে।
কিছু ক্ষেত্রে, কুকুর মালিকরা ‘স্টিক অ্যান্ড ফ্লিক’ পদ্ধতি অনুসরণ করেন, অর্থাৎ বর্জ্য অপসারণ না করে প্রকৃতির কাছাকাছি কোথাও ফেলে দেন। তাঁদের ধারণা, এতে বর্জ্য মাটিতে মিশে যাবে।
কিন্তু বেলজিয়ামের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, এই পদ্ধতিতে জমির উর্বরতা বেড়ে যায় এবং জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হয়। কারণ, অতিরিক্ত পুষ্টি উপাদান কিছু নির্দিষ্ট গাছের প্রজাতিকে আরও শক্তিশালী করে তোলে, যা অন্যান্য উদ্ভিদের জন্য ক্ষতিকর।
তাহলে, সঠিক সমাধান কী? বিশেষজ্ঞদের মতে, বিদ্যমান ব্যাগগুলি পুনর্ব্যবহার করা একটি ভালো উপায় হতে পারে।
এছাড়াও, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য আরও উন্নত এবং পরিবেশ-বান্ধব পদ্ধতি খুঁজে বের করা প্রয়োজন।
বাংলাদেশেও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সচেতনতা বাড়ানো এবং কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। শহরগুলোতে কুকুরের বর্জ্য পরিষ্কার করার জন্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করা এবং সেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সঠিক উপায় খুঁজে বের করা দরকার।
একইসঙ্গে, পরিবেশ-বান্ধব ব্যাগের ব্যবহার এবং কুকুর মালিকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা অপরিহার্য। এটি একটি সুস্থ এবং পরিচ্ছন্ন পরিবেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্য সূত্র: The Guardian