যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া পদক্ষেপ, উদ্বাস্তু শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে অভিবাসন নীতির কড়াকড়ি নতুন করে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। বিশেষ করে, সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আসা শিশুদের আটকের ঘটনায় শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
দেশটির সরকার এখন অভিভাবকহীন শিশুদের (unaccompanied minors) খুঁজে বের করে তাদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (Department of Homeland Security) শিশুদের “welfare checks” করার নামে তাদের ওপর নজর রাখছে। অনেক ক্ষেত্রে, এই শিশুদের আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সমালোচকরা বলছেন, এর মাধ্যমে পরিবার থেকে শিশুদের আলাদা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
ট্রাম্প প্রশাসন “অভয়ারণ্য শহর” (sanctuary cities)-এর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। এই শহরগুলো ফেডারেল ইমিগ্রেশন আইন (federal immigration laws) কার্যকর করতে সহযোগিতা করতে চায় না।
ট্রাম্প এই সংক্রান্ত দুটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন।
হোয়াইট হাউসের তথ্য অনুযায়ী, এই পদক্ষেপগুলোর মূল উদ্দেশ্য হল, অভিবাসন আইনকে আরও কঠোরভাবে কার্যকর করা এবং যারা আইনের পরিপন্থী কাজ করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।
এদিকে, জানা গেছে, অভিবাসন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (Immigration and Customs Enforcement – ICE) কর্মকর্তারা এখন দেশজুড়ে অভিভাবকহীন শিশুদের খুঁজে বের করছেন। তাদের হয় ফেরত পাঠানো হবে, না হয় তাদের আশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হবে।
এছাড়াও, ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে বিচার বিভাগের কর্মপদ্ধতিতেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিভাগের ভোটিং সেকশনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং আইনজীবীদের সক্রিয় মামলাগুলো খারিজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, ইলন মাস্ক এবং তার কোম্পানিগুলোও বিভিন্ন আইনি জটিলতায় পড়েছে। সিনেট ডেমোক্র্যাটদের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাস্কের বিভিন্ন কোম্পানির অন্তত ২.৩৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
এই ক্ষতির কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, মাস্কের বিভিন্ন স্বার্থের সংঘাতকে। “Doge” নামে পরিচিত একটি সরকারি বিভাগের সঙ্গে মাস্কের জড়িত থাকার বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে।
এখানে উল্লেখ্য, “Doge” সম্ভবত সরকার পরিচালনায় দক্ষতার জন্য মাস্কের একটি অনানুষ্ঠানিক প্রকল্প।
শ্রম অধিকার নিয়ে কাজ করা একটি সংস্থার ওপরও ট্রাম্প প্রশাসনের নজর রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় একটি শ্রমিক সংস্থা ন্যাশনাল লেবার রিলেশনস বোর্ড (National Labor Relations Board – NLRB)-এর ওপর আর্থিক কাটছাঁট করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
ডেমোক্রেটরা সতর্ক করে বলেছেন, এই পদক্ষেপ শ্রমিকদের অধিকারের জন্য “বিপর্যয়কর” হতে পারে।
রাজনৈতিক অঙ্গনেও কিছু পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। ইলিনয়ের ডেমোক্রেটিক গভর্নর জেবি প্রিটজকার ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির তীব্র সমালোচনা করেছেন এবং বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন।
তাঁর এই বক্তব্য ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা তৈরি করেছে।
অন্যান্য খবরে জানা যায়, একজন আইরিশ নারীকে, যিনি দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছিলেন, তাঁর পুরনো একটি অপরাধের রেকর্ড থাকার কারণে আটক করা হয়েছে।
ব্রিটিশ সরকারের কিছু শীর্ষ কর্মকর্তা ২০২৮ সালের ওপেন চ্যাম্পিয়নশিপ (Open championship) ডোনাল্ড ট্রাম্পের টার্নবেরি গলফ কোর্সে আয়োজনের জন্য গলফ কর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তথ্য সূত্র: The Guardian