ঢাকা, [আজকের তারিখ]। স্পেনের বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রায় সম্পূর্ণভাবে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে, তবে ইউরোপের ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ ব্ল্যাকআউটের কারণ এখনো অজানা। এই ঘটনা স্পেন এবং পর্তুগালে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে, যা জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তোলে।
মঙ্গলবার সকাল নাগাদ স্পেনে ৯৯ শতাংশের বেশি বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা রেড ইলেক্ট্রিকা। পর্তুগালের গ্রিড অপারেটর, রেন, জানিয়েছে যে তাদের ৮৯টি সাবস্টেশনই গতকাল রাতের শেষ নাগাদ চালু করা গেছে।
সোমবার রাতে হঠাৎ করেই স্পেন এবং পর্তুগালের বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে বিমানবন্দর ও রেলস্টেশনগুলোতে আটকা পরে বহু যাত্রী। রাজধানী মাদ্রিদসহ বিভিন্ন শহরের বাসিন্দারা অন্ধকারে ঘুমাতে বাধ্য হন। বার্সেলোনার সাগ্রাদা ফ্যামিলিয়া ব্যাসিলিকার মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর আলোও নিভে যায়, যা রাতের আকাশে মিশে যায়।
রাস্তায় নেমে আসে নিস্তব্ধতা।
বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় হাজার হাজার মানুষ স্টেশনে আটকা পরে। মাদ্রিদের মেট্রো পরিষেবা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, যদিও মঙ্গলবার সকালে তা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে। বার্সেলোনার মেট্রো পরিষেবাও স্বাভাবিক ছিল, তবে কিছু রুটে সমস্যা দেখা দেয়।
জরুরি কর্মীরা রেল ও পাতালপথ থেকে প্রায় ৩৫ হাজার যাত্রীকে উদ্ধার করেছেন।
বিদ্যুৎ না থাকার কারণে জরুরি পরিষেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। ইন্টারনেট এবং মোবাইল পরিষেবাও বন্ধ হয়ে যায়, ফলে মানুষ একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সমস্যা অনুভব করেন। এটিএম (ATM) পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নগদ টাকার সংকট দেখা দেয়।
বাজারে শুকনো খাবার, জল এবং টর্চলাইটের চাহিদা বাড়ে। এমনকি, বিদ্যুতের অভাবে হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতেও বেগ পেতে হয়।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ এক ভাষণে বলেন, “আমরা পুরো দেশে বিদ্যুৎ পুনরুদ্ধারের জন্য কাজ করছি।” তবে, এই বিপর্যয়ের কারণ এখনো পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। পর্তুগালের ন্যাশনাল সাইবারসিকিউরিটি সেন্টার জানিয়েছে, সাইবার হামলার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
ইউরোপীয় কমিশনের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট তেরেসা রিবেরা একে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে গুরুতর ঘটনাগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে সৃষ্ট এই পরিস্থিতি স্পেন এবং পর্তুগালের জনগণের জন্য এক কঠিন অভিজ্ঞতা নিয়ে আসে। দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য কর্তৃপক্ষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস