আবারো জয়, বিশ্বকাপে কি পারবে ইংল্যান্ড?

শিরোনাম: ইংল্যান্ডের জয়, বিশ্বকাপে শঙ্কা: চাপ সামলাতে পারবে তো ‘রেড রোজ’?

ইংল্যান্ড নারী রাগবি দল, ‘রেড রোজ’ সম্প্রতি ফ্রান্সের বিরুদ্ধে এক রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে জয়লাভ করেছে। খেলার ফল ছিল ৪৩-৪২। এই জয়ে তারা টানা সপ্তমবারের মতো ‘সিক্স নেশনস’ শিরোপা ঘরে তুলেছে, যা নিঃসন্দেহে বিশাল এক কৃতিত্ব।

কিন্তু মাঠের ভেতরের চিত্রটা অন্য কথা বলছে। খেলাটিতে ইংল্যান্ডের জয় এত সহজে আসেনি, বরং তাদের দুর্বলতাগুলো বেশ ভালোভাবেই চোখে পড়েছে। আর এই বিষয়টিই আসন্ন বিশ্বকাপে তাদের সম্ভাবনা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফ্রান্সের বিরুদ্ধে পাওয়া এই জয় বিশ্বকাপের জন্য দলটিকে প্রস্তুত করতে সহায়ক হবে। তবে, খেলাটির উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি এবং শেষ মুহূর্তের জয়, দলের আত্মবিশ্বাসের পাশাপাশি তাদের মানসিক দৃঢ়তার পরীক্ষা নিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, চাপ ও মানসিক দিক থেকে কঠিন পরিস্থিতিতে তারা কতটা প্রস্তুত?

ইংল্যান্ডের সাবেক রাগবি খেলোয়াড় ব্রায়ান মুর ম্যাচ শেষে তার মন্তব্যে বলেন, “যদি তারা নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে খেলত, তাহলে কি এমনটা হত?” ব্রায়ান মুর এবং কোচ জন মিচেল দুজনেই রাগবি বিশ্বকাপের কঠিন পরিস্থিতি সম্পর্কে ভালোভাবেই অবগত।

মিচেল ২০০৩ সালে নিউজিল্যান্ড দলের কোচ ছিলেন, যখন তার দল সেমিফাইনালে হেরে যায়। অন্যদিকে, ব্রায়ান মুর ১৯৯১ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড দলের সদস্য ছিলেন, যেবার তার দল অস্ট্রেলিয়ার কাছে ফাইনালে পরাজিত হয়।

ইংল্যান্ড দল বর্তমানে দারুণ ফর্মে রয়েছে, তা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। বিগত ৫৬টি ম্যাচের মধ্যে তারা মাত্র একটিতে হেরেছে। কিন্তু ফ্রান্সের বিরুদ্ধে খেলাটি বুঝিয়ে দিয়েছে, তাদের দুর্বলতা এখনো কাটেনি।

বিশেষ করে, খেলার দ্বিতীয়ার্ধে ফ্রান্সের আক্রমণ সামলাতে তাদের বেশ বেগ পেতে হয়েছে।

খেলাটিতে ইংল্যান্ডের খেলোয়াড় জুই অল্ডক্রফট এবং অ্যালেক্স ম্যাথিউজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তবে, অনেকের মনেই যেন ২০২২ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালের স্মৃতি ফিরে এসেছিল, যেখানে তারা নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে যায়।

দলের ওপর চাপ কতটা, তা এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে আবারও স্পষ্ট হয়েছে।

কোচ জন মিচেলকে আনা হয়েছে এই দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে দলকে বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত করতে। কিন্তু প্রশ্ন হল, চাপ এবং মানসিক দৃঢ়তা—এই দুটি বিষয় কি সত্যিই ‘রেড রোজ’-এর প্রধান প্রতিপক্ষ? প্রতিপক্ষের চেয়েও বড় চ্যালেঞ্জ কি তারা নিজেরাই?

যদি তাই হয়, তাহলে আসন্ন বিশ্বকাপে তাদের জন্য কঠিন পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে। কারণ, প্রতিপক্ষের দুর্বলতাগুলো কাজে লাগিয়ে জয় ছিনিয়ে নেওয়ার মানসিকতা রাখতে হবে, যা সহজ নয়।

খেলার মাঠে নিজেদের সেরাটা দিতে হলে, মানসিক দিক থেকে শক্তিশালী হওয়াটা খুবই জরুরি।

আরেকটি বিষয় মনে রাখতে হবে, ২০০৩ সালের রাগবি বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড ফেভারিট হিসেবে যাত্রা শুরু করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা কাক্সিক্ষত ফল পায়নি। এমনকি অতিরিক্ত সময়ে গড়ানো ম্যাচে জয় পেলেও, অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল।

এবারও তাদের ওপর প্রত্যাশার চাপ অনেক বেশি। একদিকে যেমন তাদের ভালো খেলার প্রমাণ দিতে হবে, তেমনই নারী রাগবিকে আরও জনপ্রিয় করে তুলতে হবে। সব মিলিয়ে, ইংল্যান্ড দলের জন্য বিশ্বকাপ জয় সহজ হবে না বলেই মনে হচ্ছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *