একজন নারীর এডিএইচডি নির্ণয়: মানসিক স্বাস্থ্যের এক নতুন দিগন্ত।
মাঝবয়সে মনোযোগ-ঘাটতি এবং অতি সক্রিয়তা ব্যাধি (এডিএইচডি)-এর নির্ণয় নিজের জীবন সম্পর্কে অনেক নতুন ধারণা এনেছিল কার্লা সোসেনকোর জীবনে। এই রোগ কিভাবে একজন নারীর জীবনের বিভিন্ন দিককে প্রভাবিত করতে পারে, সেই বিষয়ে আলোকপাত করেছেন তিনি।
সম্প্রতি প্রকাশিতব্য তার নতুন বই ‘আই’ল লুক সো হট ইন আ কফিন’-এ (I’ll Look So Hot in a Coffin) তিনি এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
ছোটবেলায় জন্মগতভাবে ক্লিফেল-ট্রেনাউনে সিন্ড্রোম (Klippel-Trenaunay syndrome) নিয়ে জন্মেছিলেন কার্লা। শারীরিক ভিন্নতার কারণে অন্যদের থেকে আলাদা অনুভব করতেন তিনি।
তবে মাঝবয়সে এডিএইচডি-এর নির্ণয় তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। আগে স্কুলে পড়াশোনা করতে, কর্মক্ষেত্রে এবং সামাজিক সম্পর্কগুলোতে যে সমস্যাগুলোর সম্মুখীন হয়েছিলেন, সেগুলোর কারণ বুঝতে পারেন তিনি।
সোসেনকোর মতে, মেয়েদের মধ্যে এডিএইচডি শনাক্ত করতে প্রায়ই দেরি হয়।
এর কারণ হলো, সমাজের প্রচলিত কিছু ধারণা। অনেক সময় মেয়েদের মধ্যে এডিএইচডি-এর ক্লাসিক্যাল লক্ষণগুলো দেখা যায় না, যেমন – অতিরিক্ত চঞ্চলতা। ফলে রোগটি শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে।
সোসেনকো তার বন্ধু মেলিসার কথা উল্লেখ করেছেন, যিনি ছোটবেলায় এডিএইচডি-তে আক্রান্ত ছিলেন এবং এই বিষয়ে সচেতন ছিলেন।
মেলিসার পরামর্শে তিনি মনোচিকিৎসকের সাথে দেখা করেন এবং পরীক্ষার মাধ্যমে এডিএইচডি শনাক্ত করতে সক্ষম হন।
এডিএইচডি নির্ণয়ের পর কার্লা ওষুধ সেবন শুরু করেন, যার মধ্যে ছিল অ্যাডারল (Adderall)। ওষুধটি তাকে মনোযোগ দিতে এবং জীবনের অনেক দিক ভালোভাবে গুছিয়ে নিতে সাহায্য করেছে।
তবে তিনি মনে করেন, ওষুধই সবকিছু নয়। আসল বিষয় হলো নিজের সম্পর্কে ভালোভাবে জানা এবং নিজেকে গ্রহণ করা।
সোসেনকো মনে করেন, আমাদের সমাজে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো দরকার। বিশেষ করে, এডিএইচডি-এর মতো সমস্যাগুলো সম্পর্কে আরও বেশি আলোচনা হওয়া উচিত, যাতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা দ্রুত চিকিৎসা ও সহায়তা পান।
তিনি বিশেষভাবে নারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যারা এ ধরনের সমস্যায় ভুগছেন, তারা যেন দ্বিধা না করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেন।
সোসেনকোর অভিজ্ঞতা আমাদের দেখায়, মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা এবং সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় একজন মানুষের জীবনকে কতখানি প্রভাবিত করতে পারে।
তথ্য সূত্র: পিপল