কাশ্মীর সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র, উদ্বেগে আন্তর্জাতিক মহল
নয়াদিল্লি এবং ইসলামাবাদ, উভয় দেশের মধ্যে কাশ্মীর সীমান্ত এলাকায় উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। গত সপ্তাহে ভারতীয়-শাসিত কাশ্মীরে একটি মারাত্মক হামলার ঘটনার পর পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়েছে। উভয় দেশই একে অপরের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছে এবং সামরিক পদক্ষেপের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
জম্মু ও কাশ্মীর অঞ্চলে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে। মঙ্গলবার তারা এই ঘোষণা করে। ভারত সরকার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কাশ্মীরে “সীমান্ত সন্ত্রাসবাদকে” সমর্থন ও অর্থ যোগানোর অভিযোগ এনেছে। অন্যদিকে, ইসলামাবাদ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
উত্তেজনা কমাতে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক পর্যায়েও বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ভিসা বাতিল এবং কূটনীতিকদের প্রত্যাহার করা হয়েছে। ভারত পাকিস্তান সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। এর প্রতিক্রিয়ায়, পাকিস্তানও সীমান্ত ও আকাশপথ বন্ধ করে দিয়েছে এবং দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার লক্ষ্যে ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি বাতিলের হুমকি দিয়েছে।
এছাড়াও, ভারত সরকার ১৯৬০ সালের সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই চুক্তির মাধ্যমে পাকিস্তানের সেচের জন্য প্রয়োজনীয় ৮০ শতাংশ জল সরবরাহ করা হয়। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এর তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। দেশটির কর্মকর্তারা বিশ্ব ব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে, নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি)-তে গত পাঁচ রাত ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি চলছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পোস্ট থেকে “উস্কানিমূলক” ছোট অস্ত্রের জবাব দিয়েছে। তবে, এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ভারতীয় একটি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করা হয়েছে। তারা একে তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘনের শামিল হিসেবে উল্লেখ করেছে।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ সোমবার রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তার দেশ ভারতের সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা