লক্ষ লক্ষ ফলোয়ার্স! কিভাবে কুকুরেরা ইনকাম করে?

সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে, কুকুর এখন আর শুধু পোষ্য প্রাণী নয়, তারা হয়ে উঠেছে অনলাইন তারকা। তাদের ছবি আর ভিডিও দিয়ে কয়েক মিলিয়ন অনুরাগী তৈরি করে, এই ‘ডগইনফ্লুয়েন্সার’রা (dogfluencer) এখন আয় করছে বিশাল পরিমাণ অর্থ।

সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, এই নতুন পেশা কিভাবে জনপ্রিয়তা লাভ করছে। ইন্টারনেটে হামেশাই চোখে পড়ে নানা ধরনের কুকুরের ছবি।

কেউ হাসিখুশি ভঙ্গিতে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে, কেউ বা বিভিন্ন পোশাকে সেজেগুজে। এদের মধ্যে কেউ কেউ এতটাই জনপ্রিয় যে, তাদের ‘ফলোয়ার’-এর সংখ্যা কয়েক মিলিয়ন ছাড়িয়ে যায়।

উদাহরণস্বরূপ, “টুনা” নামের একটি ‘চিহুয়েনি’ কুকুরের (chiweenie) কথা বলা যায়। ১৯ লক্ষ ‘ফলোয়ার’ নিয়ে টুনা প্রায়ই আলোচনায় থাকে।

এছাড়া “লকি” নামের একটি নেকড়ে-কুকুর (wolfdog) -এর ১৮ লক্ষ, “জিফপম” নামের একটি পোমেরিয়ান (Pomeranian) কুকুরের ৯০ লক্ষ, “ডগ দ্য পাগ” (Doug the pug) -এর ৩৬ লক্ষ এবং “মায়া” নামের একটি স্যাময়েড (Samoyed) কুকুরের ১৭ লক্ষ অনুরাগী রয়েছে।

কিন্তু কেন মানুষজন এই কুকুরদের এত ভালোবাসে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর প্রধান কারণ হলো তাদের বিশেষত্ব। সাধারণত আমরা যে ধরনের কুকুর দেখি, এদের থেকে তারা আলাদা।

তাদের মুখের আদল, পোশাক, বাচনভঙ্গি, সবকিছুই দর্শকদের আকৃষ্ট করে। কেউ তাদের “কিউট” (cute) বলছেন, আবার কেউ বলছেন “গ্যাপ কাওয়াই” (gap kawaii)।

জাপানি সংস্কৃতিতে “কাওয়াই” মানে হলো সুন্দর, আর “গ্যাপ” মানে হলো তাদের ত্রুটিপূর্ণ সৌন্দর্য। এই ত্রুটিই তাদের আরো আকর্ষণীয় করে তোলে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এইসব কুকুরের জনপ্রিয়তা এখন এতটাই বেড়েছে যে, তারা বিভিন্ন পণ্যের প্রচারের সুযোগ পাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “পেট ইনফ্লুয়েন্সার”-দের (pet influencers) মাধ্যমে পণ্যের প্রচার করলে মানুষ তাদের ওপর বেশি আস্থা রাখে।

কারণ, তাদের মনে হয়, মানুষ ইনফ্লুয়েন্সারদের থেকে তারা বেশি নির্ভরযোগ্য। ফলে, এই কুকুরগুলো এখন শুধু তারকা নয়, তারা ভালো অর্থও উপার্জন করছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতি ১০,০০০ ফলোয়ারের জন্য একটি কুকুর প্রায় ২,০০০ টাকার বেশি আয় করতে পারে। অর্থাৎ, কয়েক লক্ষ ফলোয়ার থাকা একটি কুকুরের আয় কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

সামাজিক অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার এই সময়ে, এই ধরনের বিষয়গুলো মানুষকে এক ধরণের মুক্তি দেয়।

তবে, কিছু নৈতিক প্রশ্নও উঠছে। কুকুরদের সাজসজ্জা এবং তাদের মানবিক রূপে উপস্থাপন করা নিয়ে অনেকে আপত্তি জানাচ্ছেন। কারণ, অনেক সময় এই ধরনের “কিউট” (cute) কুকুর তৈরি করার জন্য ইনব্রিডিং (inbreeding) করা হয়, যা তাদের স্বাস্থ্য ও জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।

সবকিছু বিবেচনা করে, এটা স্পষ্ট যে, ডগইনফ্লুয়েন্সার-দের (dogfluencer) জনপ্রিয়তা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। তারা শুধু বিনোদনই যোগায় না, বরং ব্যবসার নতুন দিগন্তও উন্মোচন করছে।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *