যুদ্ধ জয়ের ৫০ বছর: ভিয়েতনামের আকাশে আনন্দের ঢেউ!

ভিয়েতনাম যুদ্ধ: ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে উৎসব, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক।

আজ থেকে ঠিক পঞ্চাশ বছর আগে, ৩০শে এপ্রিল, ১৯৭৫, উত্তর ভিয়েতনামের সেনারা তৎকালীন দক্ষিণ ভিয়েতনামের রাজধানী সাইগন (বর্তমানে হো চি মিন সিটি) দখল করে নেয়। এর মাধ্যমে দীর্ঘদিনের বিভেদ ঘুচিয়ে ভিয়েতনাম একত্র হয়।

সেই ঐতিহাসিক ঘটনার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সম্প্রতি উৎসবের আমেজ দেখা গেছে ভিয়েতনাম জুড়ে।

হো চি মিন সিটিতে অনুষ্ঠিত হয় বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজ। এতে অংশ নেন দেশটির হাজারো মানুষ, লাল পতাকা হাতে নিয়ে তারা গেয়েছেন দেশাত্মবোধক গান।

কুচকাওয়াজের সামনে ছিল হো চি মিন-এর প্রতিকৃতি সংবলিত একটি সুসজ্জিত রথ। যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টারগুলো আকাশে ওড়ে লাল পতাকা উড়িয়ে।

অনুষ্ঠানে দেশটির স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর যোদ্ধারাও উপস্থিত ছিলেন।

এই অনুষ্ঠানে শুধু ভিয়েতনাম নয়, চীন, লাওস এবং কম্বোডিয়ার সেনারাও অংশ নেয়। ভিয়েতনামের এই অনুষ্ঠানে চীনের অংশগ্রহণ বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।

কারণ, ভিয়েতনাম যুদ্ধে চীন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। তারা ভিয়েতনামকে সামরিক সহায়তা দিয়েছিল, বিশেষ করে বিমান বিধ্বংসী প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে।

ভিয়েতনামের এই উদযাপন একদিকে যেমন যুদ্ধের স্মৃতিচারণ, তেমনি ভবিষ্যৎ সম্পর্কের ইঙ্গিতও বহন করে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ভিয়েতনামের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৩০ বছর পূর্তি হয়েছে।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র ভিয়েতনামের সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্বের সম্পর্ক বজায় রাখছে, যা দেশটির সঙ্গে সর্বোচ্চ কূটনৈতিক সম্পর্কগুলোর মধ্যে অন্যতম।

তবে, দুই দেশের সম্পর্কে কিছু ক্ষেত্রে টানাপোড়েনও দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ভিয়েতনামের প্রতি শুল্ক আরোপ এবং বৈদেশিক সাহায্য কমানোর কারণে দেশটির ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে।

যুদ্ধের সময়কার ‘এজেন্ট অরেঞ্জ’ নামক রাসায়নিক অস্ত্রের প্রভাবে দূষিত এলাকাগুলোর সংস্কার এবং অবিস্ফোরিত বোমা (unexploded ordnance) অপসারণের কাজও ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

ভিয়েতনামের এই উদযাপন যুদ্ধের স্মৃতিগুলো নতুন করে সামনে নিয়ে আসে, যা বাংলাদেশের মানুষের জন্যও বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধও ছিল মুক্তি ও আত্মনিয়ন্ত্রণের এক কঠিন সংগ্রাম।

যুদ্ধের বিভীষিকা এবং এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবগুলো উভয় দেশের মানুষের কাছেই আজও গভীর বেদনার কারণ।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *