আতঙ্কের ছায়া! রাগবি খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে, বাড়ছে উদ্বেগ

বিশ্ব রাগবি-র প্রাক্তণ খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ, গবেষণায় ঝুঁকিপূর্ণ প্রবণতা।

খেলাধুলার জগতে খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা সব সময়ই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সম্প্রতি, বিশ্ব রাগবি (World Rugby) -র একটি নতুন সমীক্ষায় প্রাক্তন খেলোয়াড়দের মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, অংশগ্রহণকারী প্রাক্তন খেলোয়াড়দের মধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশের ভবিষ্যতে স্মৃতিভ্রংশসহ (cognitive problems) স্নায়ু-সংক্রান্ত সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

বিশ্ব রাগবি গত বছর এই স্বাস্থ্য পরিষেবা চালু করে, যেখানে আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ওয়েলস, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নিউজিল্যান্ডের প্রাক্তন খেলোয়াড়দের বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পরামর্শের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এখন পর্যন্ত ১৩১ জন প্রাক্তন খেলোয়াড় এই প্রোগ্রামে নাম লিখিয়েছেন, যার মধ্যে ৬৫ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক খেলোয়াড়কে বিশেষ চিকিৎসার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

তবে, এই পরিষেবা এখনও পর্যন্ত ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা এবং জাপানে চালু করা যায়নি, কারণ বিভিন্ন ভাষায় এটি অনুবাদ করার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা হচ্ছে। ইংল্যান্ডে অবশ্য রাগবি ফুটবল ইউনিয়ন (Rugby Football Union) ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের সঙ্গে মিলিতভাবে একটি অনুরূপ প্রোগ্রাম পরিচালনা করছে।

এই গবেষণার ফল প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে প্রাক্তন খেলোয়াড়দের একটি দল তাদের আইনি পরামর্শের জন্য একটি সংস্থার (law firm) সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।

সংস্থাটি জানিয়েছে, তারা বর্তমানে ৭২৫ জন রাগবি ইউনিয়ন এবং ২৮০ জন রাগবি লীগ খেলোয়াড়দের প্রতিনিধিত্ব করছে, যাদের মধ্যে পারকিনসনস, মোটর নিউরোন রোগ, ক্রনিক ট্রমাটিক এনসেফালোপ্যাথি (CTE) এবং ডিমেনশিয়ার মতো স্নায়ু-সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগ ধরা পড়েছে।

গবেষকরা আরও লক্ষ্য করেছেন, অনেক খেলোয়াড় পরীক্ষার ফলাফল জানার ভয়ে এই প্রোগ্রাম থেকে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন।

খেলোয়াড়দের মধ্যে উদ্বেগের মাত্রা কমাতে সরাসরি পরামর্শের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

বিশ্ব রাগবির পক্ষ থেকে খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য আরও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

খেলার সময় আঘাতের ঝুঁকি কমাতে এবং খেলোয়াড়দের বিশ্রাম নিশ্চিত করতে নতুন কিছু নিয়ম তৈরি করা হয়েছে।

এর মধ্যে অন্যতম হলো, প্রত্যেক খেলোয়াড়কে বছরে কমপক্ষে ১২ সপ্তাহ খেলার মাঠের বাইরে থাকতে হবে, যেখানে তারা কোনো শারীরিক অনুশীলনে অংশ নিতে পারবেন না।

এছাড়াও, খেলোয়াড়দের বিশ্রাম এবং খেলার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খেলোয়াড়দের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় খেলাধুলা সংস্থাগুলোর আরও মনোযোগী হওয়া উচিত।

খেলোয়াড়দের উপর অতিরিক্ত খেলার চাপ কমানো এবং আঘাতের ঝুঁকি কমাতে বিজ্ঞানসম্মত পদক্ষেপ নেওয়া এখন সময়ের দাবি।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *