জাপানের বুলেট ট্রেনে সাপের হানায় বিপর্যস্ত, কয়েক ঘণ্টার জন্য বন্ধ পরিষেবা
জাপানের সবচেয়ে ব্যস্ততম বুলেট ট্রেন লাইন, টোকিও এবং ওসাকার মধ্যে চলাচলকারী শিংকানসেন (Shinkansen), বুধবার একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনার শিকার হয়। একটি বিশাল আকারের সাপ বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে পড়ায় প্রায় দেড় ঘণ্টার জন্য ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
জানা গেছে, সাপটি প্রায় এক মিটার লম্বা ছিল এবং এটি বিদ্যুতের খুঁটিতে ওঠার চেষ্টা করার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
ঘটনাটি ঘটে স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ২৫ মিনিটে, মায়িবা এবং গিফু-হাশিমার মাঝামাঝি স্টেশনের কাছে। বিদ্যুতের তারে সাপটি জড়িয়ে পড়ায় শর্ট সার্কিট হয়, যার ফলে ওই রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
যদিও ট্রেনের ভেতরে আলো এবং শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু ছিল, তবে শত শত যাত্রী এই ঘটনার কারণে গন্তব্যে পৌঁছাতে বিলম্বিত হন। সন্ধ্যা ৭টার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ট্রেন চলাচল পুনরায় শুরু হয়।
ঘটনার সময় জাপানে ‘গোল্ডেন উইক’ চলছিল, যা বিভিন্ন জাতীয় ছুটির একটি সমাহার। এই সময়ে বহু মানুষ শহর থেকে নিজেদের গ্রামে ফিরছিলেন অথবা পরিবার নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছিলেন।
এই কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী ট্রেনে ভ্রমণ করছিলেন। এছাড়াও, ওসাকা এক্সপো ২০২৫-এর কারণেও বর্তমানে পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে, যা এই রুটে যাত্রী চাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
এই রুটে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪ লক্ষ ৩০ হাজার যাত্রী চলাচল করে এবং প্রতিদিন ৩৭0টির বেশি ট্রেন চলে।
উল্লেখ্য, এই শিংকানসেন ট্রেনগুলি ঘণ্টায় ২৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত গতিতে চলতে পারে এবং টোকিও থেকে ওসাকা যেতে সাধারণত আড়াই ঘণ্টার কম সময় লাগে।
জাপানের এই বুলেট ট্রেন পরিষেবা তার সময়ানুবর্তিতা এবং নিরাপত্তার জন্য বিশ্বজুড়ে সুপরিচিত। যাত্রী সুরক্ষার ক্ষেত্রেও এর সুনাম রয়েছে।
তবে, এটি প্রথমবার নয় যখন সরীসৃপের কারণে শিংকানসেনের পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। গত বছর এপ্রিলে, একটি ট্রেনে একটি সাপ পাওয়া গিয়েছিল, যার ফলে প্রায় ১৭ মিনিটের জন্য পরিষেবা বন্ধ ছিল।
২০০৯ সালেও বিদ্যুতের তারে একটি সাপ ওঠার কারণে টোকিও এবং ফুকুশিমার মধ্যে ট্রেন চলাচল কিছু সময়ের জন্য বন্ধ ছিল।
জাপানের এই অত্যাধুনিক রেল ব্যবস্থা বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে চিন্তা করলে, দ্রুতগতির এবং নির্ভরযোগ্য গণপরিবহন ব্যবস্থার গুরুত্ব অনস্বীকার্য। উন্নত বিশ্বের এই অভিজ্ঞতা আমাদের জন্য শিক্ষণীয় হতে পারে।
ভবিষ্যতে, উন্নত প্রযুক্তি এবং উপযুক্ত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আমাদের দেশের রেল ব্যবস্থাকেও আরও নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ করে তোলা সম্ভব।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান