বদলে যাচ্ছে বিজ্ঞান: ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে তোলপাড়!

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বিজ্ঞান তহবিলের (NSF) প্রধানের পদত্যাগ: বিজ্ঞান গবেষণায় পরিবর্তনের আভাস

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনের (NSF) প্রধান সেথারামান পঞ্চনাথন পদত্যাগ করেছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে তিনি এই পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন।

বিজ্ঞান গবেষণার অগ্রগতিতে সহায়তা করে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা হলো NSF, যার বার্ষিক বাজেট প্রায় ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার = বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৯৬ হাজার কোটি টাকা)।

পঞ্চনাথনের এই পদত্যাগ এমন এক সময়ে হলো, যখন ট্রাম্প প্রশাসনের কিছু নীতিমালার কারণে সংস্থাটিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে।

জানা গেছে, ট্রাম্প প্রশাসন সরকারি ব্যয় কমানোর জন্য একটি নতুন বিভাগ তৈরি করেছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’ বা সংক্ষেপে DOGE।

এর পাশাপাশি, গবেষণা বিষয়ক কিছু ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর ফলস্বরূপ, NSF সম্প্রতি কয়েকশ’ গবেষণা প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ বাতিল করেছে, যার মোট পরিমাণ ২৩ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি (২৩ কোটি মার্কিন ডলার = বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২,৪৬০ কোটি টাকা)।

বাতিল হওয়া প্রকল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ‘বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তি’ (DEI) এবং ‘ভুল তথ্য ও অপপ্রচার’ বিষয়ক গবেষণা।

ট্রাম্প প্রশাসন DEI সম্পর্কিত কার্যক্রম সীমিত করার জন্য নির্বাহী আদেশ জারি করেছে।

বাতিল হওয়া গবেষণাগুলোর শিরোনামে ‘রেশিয়াল ইক্যুইটি ইন স্টেম’, ‘অ্যান্টি-র‍্যাসিস্ট টিচার লিডারশিপ’ এবং ‘এ্যাডভান্সিং জেন্ডার ইক্যুইটি ইন কম্পিউটিং’-এর মতো বিষয়গুলো ছিল।

এছাড়াও, ‘ভুল তথ্যের বিস্তার’ এবং ‘টিকার তথ্যের সত্যতা’ বিষয়ক গবেষণাগুলোও বাতিল করা হয়েছে।

NSF জানিয়েছে, তারা ট্রাম্পের একটি নির্বাহী আদেশের কারণে এই পদক্ষেপ নিয়েছে, যেখানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার কথা বলা হয়েছে।

সংস্থাটি আরও বলেছে, তারা এমন কোনো গবেষণা সমর্থন করে না যা ‘ভুল তথ্য’, ‘অপপ্রচার’ এবং ‘মিথ্যা তথ্য’-এর বিরুদ্ধে কাজ করে, যা জনগণের মধ্যে বিতর্কিত বিষয় নিয়ে একটি বিশেষ ধারণা তৈরি করতে পারে।

এইসব পরিবর্তনের কারণে বিভিন্ন গবেষণা সংস্থা এবং সংশ্লিষ্ট মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

ফেডারেশন অফ অ্যাসোসিয়েশনস ইন বিহেভিয়ারাল অ্যান্ড ব্রেইন সায়েন্সেস (FABBS) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিজ্ঞানীরা এখন রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে পড়েছেন, যা মূল্যবান সময় ও সম্পদের অপচয় করছে।

তাদের মতে, NSF-এর গবেষণা মূল্যায়নের একটি পরীক্ষিত প্রক্রিয়া রয়েছে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করা উচিত।

এছাড়াও, NSF-এর প্রায় ১,৫০০ জন কর্মীর ওপরও কর্মী ছাঁটাইয়ের খাঁড়া নামতে পারে।

DOGE-এর পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে বিভিন্ন সরকারি সংস্থায় কর্মী কমানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

NSF ১৯৫০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।

এর প্রধান কাজ হলো গবেষণা প্রস্তাবগুলোর বৈজ্ঞানিক মূল্যায়ন করা এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে অর্থ বরাদ্দ করা।

এর মাধ্যমে বিজ্ঞানীদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence) থেকে শুরু করে মহাবিশ্বের মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে সহায়তা করা হয়।

তথ্য সূত্র: বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *