মুক্তি! কলম্বিয়া শিক্ষার্থীর নাটকীয় মুক্তি, তোলপাড়!

ফিলিস্তিনের অধিকারের পক্ষে কথা বলার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে এক ছাত্রকে আটকের পর মুক্তি দেওয়া হয়েছে। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থীর নাম মোহসেন মাহদাওয়ি। ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে তাকে আটক করা হয়েছিল এবং সম্প্রতি তিনি বন্ডে মুক্তি পেয়েছেন।

খবরটি জানিয়েছে সিএনএন।

মোহসেন মাহদাওয়ি ফিলিস্তিনের নাগরিক। ইসরায়েল-অধিকৃত পশ্চিম তীরে একটি শরণার্থী শিবিরে তাঁর জন্ম। ২০১৪ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আসেন এবং সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পান।

আটকের সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব লাভের জন্য একটি সাক্ষাৎকারে অংশ নিচ্ছিলেন।

আদালতের নথি অনুযায়ী, গত ১৪ এপ্রিল হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ইনভেস্টিগেশন (এইচএসআই) এজেন্টরা তাকে আটক করে। মাহদাওয়ির আইনজীবীরা এই আটকের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।

তাঁদের মতে, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের অধিকারের পক্ষে কথা বলার কারণেই মূলত ট্রাম্প প্রশাসন প্রতিশোধ হিসেবে এই কাজ করেছে।

আদালতে শুনানিতে আইনজীবীরা বলেন, তাঁর মক্কেলকে অন্যায়ভাবে আটক করা হয়েছে।

আটকের কারণ হিসেবে বলা হয়, মাহদাওয়ির উপস্থিতি ও কার্যকলাপ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

মাহদাওয়িকে প্রথমে ভারমন্ট থেকে লুইসিয়ানায় সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। সেখানে তাঁকে ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)-এর একটি কেন্দ্রে রাখার পরিকল্পনা ছিল।

তবে শেষ মুহূর্তে তা ভেস্তে যায়।

মাহদাওয়ির আইনজীবী লুনা দ্রৌবি এক বিবৃতিতে জানান, তাঁরা মোহসেনের স্থায়ী মুক্তির জন্য লড়াই চালিয়ে যাবেন।

আদালত মোহসেনকে ভারমন্টে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি তাঁর শিক্ষা ও আইনজীবীদের সঙ্গে দেখা করার জন্য নিউইয়র্কে যেতে পারবেন।

আদালতের পরবর্তী শুনানিতে তাঁকে উপস্থিত থাকতে হবে।

আদালতের নথি থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালে মাহদাওয়ির বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ ছিল, তিনি একটি বন্দুকের দোকানে স্নাইপার রাইফেল এবং স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র কেনার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন।

তবে, এই ঘটনার তদন্তে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগও আনা হয়নি।

মোহসেন মাহদাওয়ি কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিন স্টুডেন্ট ইউনিয়নের সহ-প্রতিষ্ঠাতা।

তিনি গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের কঠোর সমালোচক ছিলেন এবং ২০২৪ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সংগঠিত করেছেন।

মোহসেনের বন্ধু ও সহকর্মী মাইকেল বারাতজ বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক মতপ্রকাশের কারণে কাউকে আটক বা নির্বাসিত করা হয় না। আমাদের গণতন্ত্রকে অবশ্যই এত শক্তিশালী হতে হবে যে ভিন্নমতকে সহ্য করতে পারে।”

সিএনএন সূত্রে খবরটি জানা গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *