নিরাপদ জীবনের খোঁজে: আমেরিকা ছেড়ে জার্মানির পথে, সেরা সিদ্ধান্ত!

নিউ ইয়র্কের কোলাহল ছেড়ে জার্মানির ‘নিরাপদ’ জীবনে: এক নারীর নতুন দিগন্ত।

নিউ ইয়র্কের ব্যস্ত জীবন থেকে মুক্তি খুঁজে জার্মানির মিউনিখে থিতু হয়েছেন এক নারী।

ডিজিটাল মার্কেটিং পেশায় কর্মরত, ডমিনিকান রিপাবলিক থেকে আসা মেলিসা ভার্গাস, তার জীবনের মোড় ঘুরিয়েছেন উন্নত জীবনের খোঁজে।

প্রায় আট বছর আগে, তিনি যখন তার ৩০-এর কোঠায় পৌঁছেছিলেন, তখন অনুভব করলেন জীবনের একঘেয়েমি।

সবাই তাকে সফল হতে বললেও, তিনি যেন নতুন কিছু অনুভব করতে পারছিলেন না।

নিউ ইয়র্কের কর্মব্যস্ত জীবন এবং উচ্চ জীবনযাত্রার খরচ তাকে হতাশ করে তুলেছিল।

বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা বা বিনোদনের সুযোগও ছিল সীমিত।

জার্মানির জীবনযাত্রার শান্ত পরিবেশ তাকে আকৃষ্ট করে।

২০১৬ সালে ইউরোপ ভ্রমণের সময় তিনি মিউনিখ শহরটি ঘুরে দেখেন এবং সেখানকার জীবনযাত্রা দেখে মুগ্ধ হন।

সেখানকার মানুষের জীবন উপভোগ করার ধরন তাকে বিশেষভাবে আকর্ষণ করে।

যেন সবাই জীবনটাকে উপভোগ করছে,” – এমনটাই বলছিলেন মেলিসা।

মেলিসা

নিউ ইয়র্কে ফিরে আসার কিছুদিনের মধ্যেই তিনি জার্মানির একটি সংস্থায় কাজ করার সুযোগ পান।

২০১৭ সালের শেষের দিকে তিনি স্থায়ীভাবে মিউনিখে চলে আসেন।

তার মতে, এই সিদ্ধান্তটি ছিল জীবনের সেরা একটি পদক্ষেপ।

তিনি জানান, নিউ ইয়র্কের ‘কঠোর পরিশ্রম করো এবং ফুর্তি করো’ মানসিকতা থেকে তিনি মুক্তি চেয়েছিলেন।

মেলিসা জানান, নিউ ইয়র্কে তিনি সব সময় নিজেকে মানিয়ে নিতে চেষ্টা করেছেন, কিন্তু সেখানকার জীবনযাত্রার সঙ্গে তার তেমন একটা মিল ছিল না।

তিনি বলেন, “আমি মনে করি, ২৮ বছর বয়সে আমি বুঝতে পারলাম, জীবনের আরও কিছু থাকতে পারে।

জার্মানিতে আসার পর শুরুতে কিছু সমস্যা হলেও, এখানকার জীবনযাত্রার সঙ্গে তিনি নিজেকে মানিয়ে নিয়েছেন।

ভাষার সমস্যা কাটিয়ে উঠতে তিনি জার্মান ভাষা শেখা শুরু করেন।

এখানকার সংস্কৃতি এবং প্রকৃতির প্রতি মুগ্ধতা তাকে নতুন করে বাঁচতে শিখিয়েছে।

জার্মানিতে জীবনযাত্রার মান নিউ ইয়র্কের তুলনায় অনেক বেশি সাশ্রয়ী।

মেলিসা জানান, এখানে তিনি স্বল্প খরচে ভালো মানের খাবার কেনাকাটা করতে পারেন।

এখানকার মানুষের মধ্যে কাজের প্রতি যেমন মনোযোগ রয়েছে, তেমনি তারা জীবনকে উপভোগ করতেও জানে।

জার্মানিতে অনেক সরকারি ছুটি থাকে, যা কর্মীদের বিশ্রাম এবং ভ্রমণের সুযোগ করে দেয়।

মেলিসা এখানকার প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসার কথাও উল্লেখ করেন।

তিনি জানান, গ্রীষ্মকালে তিনি প্রায় পুরো দিন বাইরে কাটান এবং তার কোনো টেলিভিশন নেই।

মেলিসা মনে করেন জার্মানি একটি নিরাপদ দেশ।

এখানে রাতে একা হাঁটাচলার ক্ষেত্রেও তেমন কোনো ভয়ের সম্ভবনা নেই।

যদিও শুরুতে তিনি কয়েক বছর থাকার পরিকল্পনা করেছিলেন, এখন তিনি এখানকার স্থায়ী বাসিন্দা।

তিনি জার্মানির সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রার সঙ্গে এতটাই মিশে গেছেন যে, এখন আর নিউ ইয়র্কে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবেন না।

অন্য কোনো দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা করলে, সেখানকার সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।

মেলিসার মতে, নতুন একটি স্থানে খাপ খাইয়ে নিতে উন্মুক্ত মন ও পরিবর্তনের মানসিকতা খুবই জরুরি।

তথ্যসূত্র: সিএনএন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *