জাপানের ফুজি পর্বতে আরোহন করতে গিয়ে একই সপ্তাহে দু’বার উদ্ধার করা হলো এক আরোহীকে। চীনের এই কলেজছাত্র, যিনি বর্তমানে জাপানে বসবাস করেন, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে পর্বতারোহণে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২৭ বছর বয়সী ওই তরুণ প্রথমবার মঙ্গলবার অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পরে শনিবার তার কিছু ব্যক্তিগত জিনিসপত্র, যেমন মোবাইল ফোন, আনতে গিয়ে আবার বিপদে পড়েন।
ফুজি পর্বত, যা জাপানের সবচেয়ে বিখ্যাত পর্বতশৃঙ্গ, সেখানে আরোহণের ক্ষেত্রে সাধারণত জুলাই মাসের ১০ তারিখ থেকে সেপ্টেম্বর মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত সময়কে উপযুক্ত ধরা হয়। কিন্তু ওই আরোহী এই সময়ের বাইরে গিয়েছিলেন।
পর্বতের চূড়ায় ওঠার পর তিনি উচ্চতাজনিত অসুস্থতায় ভুগতে শুরু করেন। শনিবার তাকে ৩০০০ মিটারের বেশি উচ্চতা থেকে উদ্ধার করা হয়।
বর্তমানে ওই আরোহীর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে, ফুজি পর্বতে আরোহীদের নিরাপত্তা এবং ব্যবস্থাপনার জন্য নতুন কিছু নিয়ম চালু করতে যাচ্ছে জাপান সরকার। অতিরিক্ত ভিড় এবং অনুপযুক্ত সরঞ্জাম ব্যবহারের কারণে অনেক সময় আরোহীরা বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হন।
তাই, আগামী ২০২৫ সাল থেকে আরোহণের ক্ষেত্রে কিছু নতুন নিয়ম চালু করা হবে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ফুজি পর্বত আরোহণের জন্য ৪,০০০ ইয়েন (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩,০০০ টাকা) ফি দিতে হবে। এছাড়াও, প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৪,০০০ জন আরোহীকে পর্বতে আরোহণের অনুমতি দেওয়া হবে এবং অনলাইনে টিকিট বুকিং-এর ব্যবস্থা চালু করা হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে, এই পর্বত আরোহণের জন্য ১,০০০ ইয়েন (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭৫০ টাকা) দেওয়ার ঐচ্ছিক ব্যবস্থা ছিল।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মতে, ফুজি পর্বতকে একটি নিরাপদ স্থান হিসেবে টিকিয়ে রাখতে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এর ঐতিহ্য বজায় রাখতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও, আরোহীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হাইকিং বিষয়ক একটি সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ এবং পরীক্ষারও ব্যবস্থা করা হবে। পর্বত আরোহণের সময়সীমা নিয়েও কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে ভোর ৩টা পর্যন্ত যারা পর্বতের চূড়ায় অবস্থিত বিশ্রামাগারে থাকবেন না, তাদের আরোহণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
পর্যটকদের সুবিধার জন্য ফুজি পর্বতের বিভিন্ন স্থানে বিশ্রামাগার তৈরি করা হয়েছে, যেখানে রাত্রিযাপনেরও ব্যবস্থা রয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন