আটলান্টার একটি অভিজাত হোটেলের ছাদে আটকা পড়া একটি কানাডিয়ান হাঁসের পরিবারকে সফলভাবে উদ্ধার করা হয়েছে। মা-বাবা হাঁসের সাথে ছাদের উপর ছিল তাদের পাঁচটি ছোট বাচ্চা, যাদের ওড়ার মতো বয়স হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘটনাটি বর্তমানে প্রকৃতি প্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে আটলান্টার পুরনো চতুর্থ ওয়ার্ড এলাকায়, যেখানে আধুনিক রুচিশীল হোটেলটির ছাদে বাসা বেঁধেছিল হাঁসের একটি পরিবার। হাঁসের ছানাগুলো উড়তে না পারায় তারা নিচে নামতে পারছিল না।
অবশেষে এগিয়ে আসেন ওয়াইল্ডলাইফ রেসকিউয়ার (বন্যপ্রাণী উদ্ধারকারী) মাইকেল ওয়াটার্স। তিনি এওয়্যার ওয়াইল্ডলাইফ সেন্টারের একজন স্বেচ্ছাসেবী।
উদ্ধার কাজটি সহজ ছিল না, কারণ হাঁসগুলো খুব ভীত ছিল এবং প্রচণ্ড বাতাস বইছিল। ওয়াটার্স জানান, তিনি প্রথমে বাচ্চাগুলোকে একটি বাক্সে বন্দী করেন।
এরপর বাবা হাঁসটিকে ধরতে গেলে সে উড়াল দেয় এবং নিচে নেমে আসে, যেন তার বাচ্চাদের জন্য সাহায্য চাইছে। মা হাঁসটিকেও বাগে আনতে বেগ পেতে হয় ওয়াটার্সকে।
তিনি যখন বাচ্চাগুলোকে নিয়ে নিচে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখন মা হাঁসটি তাদের অনুসরণ করে।
অবশেষে, ওয়াটার্স হাঁস পরিবারটিকে নিরাপদে নিচে একটি পুকুরে নিয়ে যান। সেখানে আগে থেকেই বাবা হাঁসটি তাদের জন্য অপেক্ষা করছিল।
হাঁসের ছানাগুলো আগে কখনো মাটিতে বা পানিতে নামেনি। কিন্তু তাদের বন্য প্রকৃতি তাদের দ্রুত মানিয়ে নিতে সাহায্য করে। তারা সঙ্গে সঙ্গেই পানিতে নেমে যায় এবং মা-বাবার সাথে তাদের স্বাভাবিক জীবন শুরু করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কানাডিয়ান হাঁস খুব সহজে পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে পারে। তারা ঘাসযুক্ত জায়গা পছন্দ করে, যেখানে তারা সহজেই হেঁটে বেড়াতে পারে।
কাছাকাছি পুকুর বা জলাশয় থাকলে তাদের সুবিধা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে কানাডিয়ান হাঁস ফেডারেল আইন দ্বারা সংরক্ষিত। কোনো আহত বা অসহায় হাঁস দেখলে বা তাদের পুনর্বাসন করতে হলে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের মত বাংলাদেশেও বন্যপ্রাণী রক্ষার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়। আমাদের দেশেও পরিযায়ী পাখির আগমন ঘটে, যাদের সুরক্ষাও জরুরি।
বন্যপ্রাণী বিষয়ক কোনো সমস্যায় পড়লে, স্থানীয় বন বিভাগ অথবা বন্যপ্রাণী উদ্ধারকারী সংস্থার সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
এই ঘটনার মাধ্যমে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে মানুষের আগ্রহ আরও বাড়বে এবং ভবিষ্যতে বন্যপ্রাণী রক্ষায় আরও সচেতনতা তৈরি হবে বলে আশা করা যায়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন।