হাসপাতালে বন্দুকযুদ্ধ: পুলিশের গুলিতেই মৃত্যু, হতবাক সবাই!

পেনসিলভেনিয়ার একটি হাসপাতালে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যু নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। স্থানীয় তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, গত ২২শে ফেব্রুয়ারি, ইয়র্ক শহরের ইউপিএমসি মেমোরিয়াল হাসপাতালে ঘটা ওই ঘটনায় নিহত পুলিশ অফিসার অ্যান্ড্রু ডব্লিউ. দুয়ার্তেকে মূলত পুলিশের ছোড়া গুলিতেই প্রাণ হারাতে হয়েছে।

তদন্তে জানা গেছে, হাসপাতালে হামলাকারী ব্যক্তি, ডায়োজিনিস আর্চ্যাঞ্জেল-ওর্টিজ, তার সঙ্গীর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরই এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করে। এরপর তিনি কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মীকে জিম্মি করেন।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে পুলিশের গুলিতে নিহত হন হামলাকারী এবং দুয়ার্তে। এছাড়াও, পুলিশের গুলিতে আহত হয়েছেন আরও একজন পুলিশ অফিসার এবং কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মী। ইয়র্ক কাউন্টির প্রধান তদন্তকারী কর্মকর্তা টিম বার্কার এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।

বার্কার জানান, হামলাকারী আর্চ্যাঞ্জেল-ওর্টিজ হাসপাতালে আসার আগে একটি ছুরি ও জিপ-টাই কেনেন এবং ২০১৭ সালে অন্য একটি কাউন্টি থেকে চুরি করা বন্দুক ব্যবহার করেন।

হাসপাতালে তার সঙ্গীর মৃত্যুর খবর শুনে তিনি হতভম্ব হয়ে পড়েন এবং এর পরেই এলোপাথাড়ি গুলি চালান। তিনি বলেন, “কর্মকর্তারা অত্যন্ত সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। তারা জীবন বাজি রেখে জিম্মিদের বাঁচাতে এগিয়ে গিয়েছিলেন।”

ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে বার্কার আরও জানান, আর্চ্যাঞ্জেল-ওর্টিজ তার ভাইকে ফোন করে বাড়ি পরিষ্কার করতে এবং গয়না সরিয়ে ফেলতে বলেন। তিনি নাকি তার ভাইকে বলেছিলেন, “এভাবেই আমি শেষ হতে যাচ্ছি।”

ঘটনার সময়কার একটি বর্ণনা পাওয়া যায়, হাসপাতালে কর্মরত নার্স তোশা ট্রস্টলের কাছ থেকে। তিনি জানান, বন্দুকধারী তাকে মানব-ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন।

তার হাত পিছমোড়া করে বেঁধে, তাকে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের মুখোমুখি দেখা হয়। নার্স তোশা জানান, তিনি আর্চ্যাঞ্জেল-ওর্টিজকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেছিলেন, কিন্তু তিনি শোনেননি।

গুলির শব্দে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং পরে কোনোমতে নিজেকে রক্ষা করেন।

আহতদের মধ্যে, গুলিবিদ্ধ হওয়া চিকিৎসক এবং এক স্বাস্থ্যকর্মীও রয়েছেন। তদন্তকারীরা আর্চ্যাঞ্জেল-ওর্টিজের মানসিক অবস্থা জানার চেষ্টা করলেও, তার এই ভয়াবহ পদক্ষেপের কোনো সুস্পষ্ট কারণ খুঁজে পাননি।

বার্কার বলেন, “কখনো কোনো ঘটনার ‘কেন’ থাকে না।”

এই ঘটনার পর, যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। হাসপাতালে সহিংসতার এই ঘটনা স্বাস্থ্যখাতে কর্মরতদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *