মা হতে চাওয়া এক নারীর জীবনে বন্ধুত্বের টানাপোড়েন! আসন্ন একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে বাসর রাতের আগে বন্ধুদের নিয়ে আনন্দ করার জন্য আয়োজিত অনুষ্ঠানে (ব্যাচেলর পার্টি) যোগ দিতে না পারায়, কনে তার এক বান্ধবীর উপর ভীষণ রেগে গিয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে, যখন ওই নারী, যিনি সম্প্রতি দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দিয়েছেন, তার বান্ধবীর বিয়েতে একজন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করার কথা। বিয়ের কনে তার বন্ধুকে বিশেষভাবে তৈরি হওয়া একটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু নবজাতকের মা হওয়া ওই নারী, যিনি তার শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান, আসন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
জানা যায়, কনের এই ব্যাচেলর পার্টিটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল মা দিবসের ছুটিতে, যা সদ্য মা হওয়া নারীর জন্য ছিল খুবই বিশেষ একটি সময়। এই অনুষ্ঠানটি ছিল তার বাড়ি থেকে বেশ দূরের একটি স্থানে, যেখানে গেলে তাকে তার কয়েক সপ্তাহের শিশুটিকে একা রেখে যেতে হতো।
নিজের অপারগতার কারণ ব্যাখ্যা করে ওই নারী জানান, “আমি তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছি যে, আমি সত্যিই সেখানে যেতে চাই, কিন্তু আমার সন্তানের জন্য এত লম্বা সময়ের জন্য তাকে একা রেখে আসা সম্ভব নয়। আমার কাছে সন্তানের দেখভাল করাটাই এখন প্রধান।”
কিন্তু এতে কনে মোটেই খুশি হননি। বরং তিনি এতটাই রেগে যান যে, তিনি নাকি তার বন্ধুকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, “ভবিষ্যতে তার সঙ্গে কোনো কথা বলার প্রয়োজন নেই এবং বিয়ের দিন দেখা হবে।”
বিষয়টি নিয়ে ওই নারী বলেন, “আমি সত্যিই সেখানে যেতে চেয়েছিলাম, কিন্তু আমার সন্তানদের দেখাশোনা করাটা আমার কাছে সবসময়ই অগ্রাধিকার পায়। একজন মা হিসেবে সন্তানের প্রতি দায়িত্ব পালনে আমাকে খারাপ অনুভব করানোটা আমি ভালোভাবে নিইনি।”
ঘটনাটি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেক ব্যবহারকারী মায়ের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছেন এবং কনের এমন আচরণকে “স্বার্থপর” ও “অযৌক্তিক” হিসেবে মন্তব্য করেছেন। তাদের মতে, মাতৃত্বের প্রথম দিনগুলোতে একজন মায়ের সন্তানের প্রতি মনোযোগ দেওয়াটা সবচেয়ে জরুরি।
কেউ কেউ আবার কনের দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টা দেখার চেষ্টা করেছেন। তাদের মতে, যারা মা হননি, তাদের জন্য একজন নতুন মায়ের পরিস্থিতি বোঝা কঠিন হতে পারে। তারা পরামর্শ দিয়েছেন, ওই নারী চাইলে কনের সঙ্গে অন্য কোনোভাবে এই উদযাপনটি করতে পারেন। যেমন, একসঙ্গে কেনাকাটা অথবা রাতের খাবার খেতে যাওয়া যেতে পারে।
বন্ধুত্ব এবং পারিবারিক বন্ধনের এই টানাপোড়েন আমাদের সমাজে নতুন নয়। এই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে সম্পর্কের গুরুত্ব এবং একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া কতটা জরুরি।
তথ্য সূত্র: পিপল