বিপদ বাড়ছে! ঘাস থেকে ভয়াবহ দাবানলের সৃষ্টি

পশ্চিমের দেশগুলোতে মারাত্মক দাবানলের পেছনে ঘাস একটি প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘাস দ্রুত বাড়ছে এবং শুষ্ক হয়ে আরো সহজে আগুন ধরছে। এর ফলে বিশাল এলাকা জুড়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এই আগুন, যা সেখানকার জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলছে।

এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা।

যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলে, বিশেষ করে ক্যালিফোর্নিয়া এবং অন্যান্য রাজ্যে, দাবানলের ঘটনা বাড়ছে। এর প্রধান কারণ হলো—বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে আবহাওয়ার পরিবর্তন এবং মানুষের বসতি স্থাপন। ঘাস খুব দ্রুত বাড়ে এবং শুষ্ক মৌসুমে এটি শুকনো খড়ের মতো হয়ে যায়, যা সহজেই আগুনে পরিণত হতে পারে।

আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তনেও ঘাস দ্রুত শুকিয়ে যায় এবং আগুনের বিস্তার ঘটায়।

আবাসন এলাকাগুলো বনাঞ্চলের কাছাকাছি হওয়ায় আগুন লাগার ঝুঁকি বাড়ছে। মানুষ বনাঞ্চলের কাছাকাছি বাড়ি তৈরি করায় একদিকে যেমন আগুনের সূত্রপাত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে, তেমনি আগুন লাগলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বেড়ে যাচ্ছে। গত কয়েক দশকে দাবানলের কারণে ঘরবাড়ি ধ্বংসের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে।

এর মূল কারণ হলো—ঘরবাড়িগুলো বনাঞ্চলের কাছাকাছি তৈরি করা হয়েছে এবং ঘাস ও ঝোপঝাড়ের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। বৃষ্টিপাতের ধরন পরিবর্তন হওয়ায় ঘাস বেশি জন্ম নিচ্ছে। শীতকালে তুষারপাত কম হওয়ায় ঘাসগুলো শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় উন্মুক্ত থাকছে, ফলে দ্রুত শুকিয়ে যাচ্ছে।

শুষ্ক ঘাস সহজেই জ্বলে ওঠে এবং শক্তিশালী বাতাসে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

ক্যালিফোর্নিয়ার মোহাভে মরুভূমির ঘটনা এর একটি উদাহরণ। এখানে আগুনের প্রধান কারণ হলো—আগত ঘাস, যা দ্রুত ছড়িয়ে পরে বহু মূল্যবান গাছপালা এবং জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করেছে। এই ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আমাদের দেশেও প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে। ঘূর্ণিঝড়, বন্যা এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির মতো সমস্যাগুলো বাড়ছে, যা আমাদের জীবনযাত্রাকে কঠিন করে তুলছে।

তাই, উন্নত দেশগুলোতে ঘটা এই ধরনের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের পরিবেশ রক্ষার দিকে আরও বেশি মনোযোগ দিতে হবে। বনভূমি রক্ষা, সবুজায়ন এবং সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে আমরা আমাদের দেশকে আরও সুরক্ষিত করতে পারি।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *