মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে দেখা দিয়েছে দুর্বলতার আভাস, যা বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। সম্প্রতি প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক হয়েছে, যা বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে শঙ্কার সৃষ্টি করেছে।
এর কারণ হিসেবে মূলত মার্কিন সরকারের বাণিজ্য নীতিকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, ২০২৩ সালের প্রথম প্রান্তিকে দেশটির মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কমেছে ০.৩ শতাংশ হারে। যেখানে আগের প্রান্তিকে জিডিপি’র হার ছিল ২.৪ শতাংশ।
সাধারণত, কোনো দেশের অর্থনীতিতে ক্রমাগত দুই প্রান্তিক ধরে জিডিপি ঋণাত্মক থাকলে, তাকে মন্দা (Recession) হিসেবে ধরা হয়। যদিও এখনই সেই পরিস্থিতি হয়নি, তবে অর্থনীতির এই নিম্নগতি অনেককে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পতনের মূল কারণ হলো, যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন শুল্ক নীতি। জানা গেছে, মার্কিন সরকার তাদের বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।
এর ফলস্বরূপ, ব্যবসায়ীরা আমদানি করা পণ্যের মজুত (stockpiling) করা শুরু করেন, যাতে শুল্ক বৃদ্ধির আগেই পণ্য সংগ্রহ করা যায়। এই মজুত করার প্রবণতা সাময়িকভাবে অর্থনীতিকে সহায়তা করলেও, দীর্ঘমেয়াদে তা ক্ষতির কারণ হতে পারে।
কারণ, এখন মানুষ কম খরচ করবে।
অর্থনীতিবিদদের একাংশ মনে করেন, এই মজুত করার কারণে জিডিপি’র প্রকৃত চিত্র পাওয়া যাচ্ছে না। তাদের মতে, দ্বিতীয় প্রান্তিকে অর্থনৈতিক চিত্র আরও খারাপ হতে পারে।
কিছু অর্থনীতিবিদ অবশ্য পরিস্থিতিকে ভিন্নভাবে দেখছেন। তাদের মতে, শুল্ক আরোপের আগে এমনটা হওয়া স্বাভাবিক।
যুক্তরাষ্ট্রের এই অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের একটি বড় বাজার।
মার্কিন অর্থনীতি দুর্বল হলে, বাংলাদেশের রপ্তানি খাতে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এছাড়া, রেমিট্যান্সের (Remittances) উপরও এর প্রভাব পড়তে পারে।
তাই, বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা জরুরি।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি নিয়ে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।