এলোন মাস্ক, যিনি বর্তমানে টেসলার প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন যে তিনি তার অন্য একটি পদ, ‘ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি’ (DOGE)-তে তার কাজের সময় কমিয়ে দেবেন এবং আগের চেয়ে বেশি সময় দেবেন টেসলার উন্নয়নে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, মাস্কের এই পদক্ষেপের পরেও টেসলার ব্র্যান্ডের ওপর যে ক্ষতি হয়েছে, তা হয়তো সহজে সারানো যাবে না।
সম্প্রতি টেসলার বিক্রি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। এর পেছনে অনেকে মাস্কের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতাকে দায়ী করছেন। বিশেষ করে, প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি মাস্কের প্রকাশ্য সমর্থন এবং DOGE-তে তার বিতর্কিত ভূমিকা অনেক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। টেসলার শোরুমের সামনে বিক্ষোভ এবং বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে, অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, মাস্কের এই পদক্ষেপের কারণে টেসলার বিক্রি হয়তো আরও কমতে পারে।
শেয়ার বাজারেও এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে। মাস্কের এই ঘোষণার পর বুধবার সকালে টেসলার শেয়ারের দাম সামান্য বেড়েছিল, যদিও কোম্পানিটি তাদের মুনাফায় ৭৬ শতাংশ পতনের খবর প্রকাশ করেছে।
তবে, অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, মাস্কের রাজনৈতিক বিতর্ক এবং তার ব্র্যান্ডের ওপর এর প্রভাব এতটাই গভীর যে, তা সহজে দূর করা যাবে না। তাদের মতে, পরিবেশ সচেতন ক্রেতাদের মধ্যে টেসলার যে জনপ্রিয়তা ছিল, তা ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইউরোপের বাজারেও টেসলার বিক্রি কমেছে। গত মাসে, ইউরোপীয় ইউনিয়নে টেসলার বিক্রি আগের বছরের তুলনায় ৩৬ শতাংশ কমে গেছে, যেখানে সামগ্রিকভাবে ব্যাটারি-চালিত গাড়ির বিক্রি ১৭ শতাংশ বেড়েছে।
কিছু বিশ্লেষক অবশ্য মনে করেন, মাস্ক যদি টেসলার প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দেন, তবে হয়তো পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে পারে। কিন্তু ব্র্যান্ড ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা কেলি ও’কিয়ের মতে, মাস্কের বিতর্কিত আচরণের কারণে টেসলার ব্র্যান্ডের যে ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণ করা কঠিন। তিনি এটিকে ‘ব্র্যান্ডের আত্মহত্যা’ হিসেবেও উল্লেখ করেছেন।
টেসলার পক্ষ থেকে অবশ্য এই ক্ষতির কারণ হিসেবে অর্থনৈতিক মন্দা এবং প্রতিকূল পরিবেশকে দায়ী করা হয়েছে। তবে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাস্কের রাজনৈতিক অবস্থান এবং বিতর্কিত কার্যকলাপের কারণেই মূলত এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন