খেলা থেকে অবসর নেওয়া আমেরিকান ফুটবল খেলোয়াড় অ্যালেক্স স্মিথের জীবনের এক কঠিন অধ্যায় নিয়ে সম্প্রতি আলোচনা শুরু হয়েছে। ২০১৮ সালে একটি খেলার সময় পায়ে গুরুতর আঘাত পাওয়ার পর তিনি কিভাবে মৃত্যুর খুব কাছ থেকে ফিরে এসেছিলেন, সেই গল্প এখন সবার মুখে মুখে।
তাঁর সেই আঘাত এতটাই মারাত্মক ছিল যে, সেরে উঠতে তাঁকে সতেরোটি অস্ত্রোপচার করতে হয়েছিল। শুধু তাই নয়, এই ঘটনার পর তিনি দীর্ঘদিন ধরে তীব্র যন্ত্রণার সঙ্গে লড়াই করেছেন।
আঘাত পাওয়ার পর তাঁর পায়ে সংক্রমণ হয়, যা ধীরে ধীরে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়েছিল। চিকিৎসকেরা সেসময় তাঁর জীবন বাঁচানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন।
এই ঘটনার পরে তিনি নয় মাসের বেশি সময় ধরে হাসপাতালে ছিলেন। দীর্ঘ হাসপাতালে থাকার সময়টা তাঁর জন্য ছিল এক কঠিন অভিজ্ঞতা।
স্মিথ বর্তমানে ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ভারটেক্স ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন এবং একটি নতুন ক্যাম্পেইন শুরু করেছেন। এই ক্যাম্পেইনের মূল উদ্দেশ্য হলো—যন্ত্রণার সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য মানুষকে সচেতন করা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক ব্যবস্থা নিতে উৎসাহিত করা।
তাঁর মতে, “ব্যথা একটি খুবই ব্যক্তিগত বিষয়, যা সবার জীবনেই কোনো না কোনো সময় আসে। ব্যথাকে আমরা এড়িয়ে যেতে পারি না।”
তিনি আরও বলেন, “হাসপাতাল থেকে যখন আমাকে ওষুধ দিয়ে বাড়ি পাঠানো হলো, তখন আমার স্ত্রী এবং আমি দুজনেই খুব ভয় পেয়েছিলাম। আমরা জানতাম না কীভাবে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করব।”
২০০৫ সালের এনএফএল ড্রাফটে প্রথম স্থান অর্জনকারী এই খেলোয়াড় বর্তমানে ইএসপিএনে (ESPN) একজন বিশ্লেষক হিসেবে কাজ করছেন এবং তরুণ খেলোয়াড়দের পরামর্শ দিচ্ছেন।
খেলা ছাড়ার পর তিনি বিভিন্ন ব্যবসায়িক আলোচনায়ও অংশ নিচ্ছেন।
স্মিথ মনে করেন, তাঁর এই অভিজ্ঞতা অনেকের জীবনে অনুপ্রেরণা জোগাতে পারে। তিনি বলেন, “আমার জীবনের এই কঠিন সময়ে অনেকে আমাকে সাহায্য করেছেন, তাঁদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আমি মনে করি, যেকোনো মানুষই এই ধরনের পরিস্থিতির সঙ্গে পরিচিত হতে পারে।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যথার সঠিক ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করা খুবই জরুরি। আমাদের দেশেও অস্ত্রোপচার বা অন্য কোনো আঘাতের পর অনেক রোগী ব্যথায় ভোগেন।
অনেক সময় তাঁরা সঠিক চিকিৎসা পান না। তাই অ্যালেক্স স্মিথের এই উদ্যোগ আমাদের দেশের মানুষের জন্যেও গুরুত্বপূর্ণ।
ডাঃ ফারহানা আহমেদ, একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক, এই প্রসঙ্গে বলেন, “আমাদের দেশেও অস্ত্রোপচারের পর বা অন্য কোনো আঘাতের কারণে ব্যথার সঠিক ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। রোগীদের ব্যথামুক্ত জীবন দেওয়া আমাদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।”
অ্যালেক্স স্মিথের এই অভিজ্ঞতা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, জীবনের যেকোনো কঠিন পরিস্থিতিতে সঠিক চিকিৎসা এবং মানসিক সমর্থন কতটা জরুরি।
তথ্য সূত্র: People