বর্তমানে স্মার্টফোন বাজারে আবারও ফিরছে নস্টালজিয়া। মটোরোলা তাদের জনপ্রিয় ফ্লিপ ফোন, রেজর (Razr) -এর নতুন সংস্করণ নিয়ে এসেছে, যেখানে যুক্ত করা হয়েছে অত্যাধুনিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)।
নতুন এই ফোনগুলো একদিকে যেমন আকর্ষণীয় ডিজাইন নিয়ে এসেছে, তেমনই এতে রয়েছে বিভিন্ন এআই প্রযুক্তির সমন্বয়। গুগল, মেটা, মাইক্রোসফট এবং পারপ্লেক্সিটির মতো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে এই ফোনগুলোতে।
নতুন রেজর ফোনগুলি হলো – Razr, Razr Plus এবং Razr Ultra।
ফোনগুলোতে এআই প্রযুক্তি ব্যবহারের মূল কারণ হলো ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা আরও উন্নত করা। উদাহরণস্বরূপ, ফোনের স্ক্রিনে চলমান বিষয়গুলি বিশ্লেষণ করে উপযুক্ত পরামর্শ দেওয়া হবে, অথবা গুরুত্বপূর্ণ নোটিফিকেশনগুলো সংক্ষিপ্ত আকারে তুলে ধরা হবে।
পারপ্লেক্সিটির প্রযুক্তি ব্যবহার করে, ব্যবহারকারী যদি জন্মদিনের পার্টির আইডিয়া খুঁজেন, তাহলে ফোনটি সেই অনুযায়ী ছবি তৈরি করার পরামর্শ দিতে পারে, যা নিমন্ত্রণপত্রে ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত হবে।
রেজর আলট্রা (Razr Ultra), ফোনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দামি, ব্যবহারকারীর চোখের দিকে তাকালেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে এআই সহকারীকে সক্রিয় করতে পারে।
গুগল-এর জেমিনি (Gemini) সহকারীও এই ফোনে যুক্ত করা হয়েছে, যা ব্যবহারকারীদের ভ্রমণের পরিকল্পনা তৈরি করতে অথবা গুগল ফটোস থেকে নির্দিষ্ট ছবি খুঁজে বের করতে সাহায্য করবে। মেটা’র লামা এআই মডেলও ডিফল্টভাবে এই ফোনে ইন্টিগ্রেটেড করা হয়েছে, যা নোটিফিকেশনগুলো সংক্ষিপ্ত করতে সহায়তা করবে।
মাইক্রোসফটের কো-পাইলট (Copilot) সহকারীও এই ফোনে পাওয়া যাবে।
এই ফোনগুলো তৈরি করার সময় মটোরোলা বিভিন্ন এআই প্রযুক্তি সরবরাহকারীর কাছ থেকে তাদের সেরা প্রযুক্তি ব্যবহারের চেষ্টা করেছে। উদাহরণস্বরূপ, পারপ্লেক্সিটি তাদের গবেষণা দক্ষতার জন্য পরিচিত, তাই তাদের প্রযুক্তি যুক্ত করা হয়েছে, অন্যদিকে মাইক্রোসফটের কো-পাইলট উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সহায়তা করে।
তবে, এই নতুন ফ্লিপ ফোনগুলোর বাজারে আসার সময়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো গুগলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ। একটি ফেডারেল আদালত এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, গুগল সার্চ বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রেখেছে।
এই কারণে, গুগলকে অ্যান্ড্রয়েড থেকে আলাদা করার বা তাদের সার্চ ইঞ্জিনকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া বন্ধ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যদিও গুগল এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার পরিকল্পনা করছে।
অন্যদিকে, বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি পণ্যের দাম বাড়ছে। বিশেষ করে চীন থেকে প্রযুক্তি পণ্য আমদানির ওপর শুল্কের কারণে অনেক পণ্যের দাম বাড়ছে।
তবে, মটোরোলার মূল কোম্পানি লেনোভোর সরবরাহ শৃঙ্খলের সুবিধা থাকায়, তারা এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে। নতুন রেজর ফোনগুলোর দাম গত বছরের মডেলগুলোর মতোই রাখা হয়েছে।
রেজর আলট্রা-র দাম প্রায় ১,৩০০ মার্কিন ডলার (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী প্রায় ১,৪৪,০০০ টাকা), রেজর প্লাস-এর দাম ১,০০০ মার্কিন ডলার (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী প্রায় ১,১০,৭০০ টাকা), এবং রেজর-এর দাম ৭০০ মার্কিন ডলার (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী প্রায় ৭৭,৫০০ টাকা)।
নতুন এই ফোনগুলো নিঃসন্দেহে প্রযুক্তিপ্রেমীদের জন্য আকর্ষণীয় হতে যাচ্ছে।
বিশেষ করে, যারা ফ্লিপ ফোনের নস্টালজিয়া পছন্দ করেন এবং একই সাথে আধুনিক এআই প্রযুক্তির সুবিধা পেতে চান, তাদের জন্য এটি একটি দারুণ বিকল্প হতে পারে।
(বি.দ্র: উল্লেখিত মূল্য আন্তর্জাতিক বাজার থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে, যা সময়ের সাথে পরিবর্তনশীল।)
তথ্য সূত্র: CNN