শিরোনাম: স্মৃতির মঞ্চে বুড়িয়ে যাওয়া: স্যামুয়েল বেকেটের ‘ক্র্যাপস লাস্ট টেপ’
মঞ্চে জীবনের আয়না, যেখানে একজন মানুষ তার অতীতকে নতুন করে আবিষ্কার করে। বিখ্যাত আইরিশ নাট্যকার স্যামুয়েল বেকেটের কালজয়ী নাটক ‘ক্র্যাপস লাস্ট টেপ’ তেমনই এক গল্প নিয়ে আসে, যা সময়ের সঙ্গে মানুষের স্মৃতি ও অনুভূতির পরিবর্তনকে তুলে ধরে।
সম্প্রতি, এই নাটকটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, কারণ খ্যাতিমান অভিনেতা গ্যারি ওল্ডম্যান এবং স্টিফেন রী-র অভিনয়ে এটি নতুন করে মঞ্চস্থ হয়েছে।
‘ক্র্যাপস লাস্ট টেপ’-এর মূল চরিত্র ক্র্যাপ, যিনি জীবনের শেষ প্রান্তে এসে নিজের অতীতের কথা শোনেন। নাটকের কেন্দ্রে রয়েছে একটি টেপ রেকর্ডার, যেখানে তিনি তার জীবনের নানা মুহূর্ত, প্রেম, হতাশা এবং সাফল্যের কথা রেকর্ড করে রেখেছেন।
বয়স্ক ক্র্যাপ যখন তার পুরনো টেপ শোনেন, তখন যেন তিনি নিজের অতীতের সঙ্গে নতুন করে পরিচিত হন। এই নাটকের প্রধান আকর্ষণ হলো, একজন মানুষ কীভাবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যায়, কীভাবে তার স্মৃতিগুলো নতুন রূপ নেয়।
গ্যারি ওল্ডম্যান বর্তমানে ইয়র্ক থিয়েটার রয়্যালে এবং স্টিফেন রী লন্ডনের বারবিকানে এই চরিত্রে অভিনয় করছেন।
ওল্ডম্যান, যিনি সাধারণত চলচ্চিত্রের অভিনেতা হিসেবে পরিচিত, দীর্ঘদিন পর মঞ্চে ফিরে এসেছেন। তিনি শুধু অভিনেতা নন, এই নাটকের পরিচালক এবং ডিজাইনারও।
অন্যদিকে, স্টিফেন রী-র অভিনয় জীবনের অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। তিনি এর আগে বেকেটের সঙ্গে কাজ করেছেন এবং তার নিজস্ব আর্কাইভ থেকে তরুণ ক্র্যাপের কণ্ঠস্বর ব্যবহার করেছেন, যা তার অভিনয়কে আরও গভীরতা দিয়েছে।
‘ক্র্যাপস লাস্ট টেপ’ আসলে মানুষের জীবনের এক গভীর উপলব্ধির গল্প। এই নাটকে, অতীতের স্মৃতিগুলো বর্তমানের সঙ্গে মিশে এক জটিল জগৎ তৈরি করে।
বেকেটের এই মাস্টারপিস আমাদের মনে করিয়ে দেয়, জীবন একটি চলমান প্রক্রিয়া, যেখানে স্মৃতি, আবেগ এবং অনুভূতির পরিবর্তন অনিবার্য।
নাটকটি শুধু একজন ব্যক্তির জীবনের গল্প নয়, বরং এটি আমাদের সবার ভেতরের গল্প। আমরা সবাই আমাদের অতীতের স্মৃতি নিয়ে বাঁচি, যা আমাদের বর্তমানকে গড়ে তোলে।
তাই, ‘ক্র্যাপস লাস্ট টেপ’ আমাদের প্রত্যেকের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা হতে পারে।
তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান