আতঙ্ক! পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে সোভিয়েত যুগের মহাকাশযান, কী হবে?

মহাকাশে ভাসমান একটি সোভিয়েত যুগের মহাকাশযান, যা ১৯৭০-এর দশকে শুক্র গ্রহে অবতরণের উদ্দেশ্যে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল, সম্ভবত আগামী সপ্তাহেই পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অনিয়ন্ত্রিতভাবে প্রবেশ করতে পারে। এমনটাই আশঙ্কা করছেন মহাকাশ বিষয়ক বিজ্ঞানীরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কসমস-৪৮২ নামের এই মহাকাশযানটি ১৯৭২ সালে উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। এটি মূলত শুক্র গ্রহে অবতরণের জন্য তৈরি করা হয়েছিল, কিন্তু উৎক্ষেপণ ত্রুটির কারণে কক্ষপথেই আটকে যায়।

ডাচ বিজ্ঞানী মার্কো ল্যাংব্রোকের ধারণা, সম্ভবত আগামী ১০ই মের কাছাকাছি সময়ে এটি পুনরায় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করবে। তার মতে, এটি ঘণ্টায় প্রায় ২৪২ কিলোমিটার (১৫০ মাইল) বেগে পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়তে পারে।

ল্যাংব্রোক আরও জানিয়েছেন, এই মহাকাশযানটি আকারে খুব বড় নয়। এর ওজন প্রায় ৫০০ কিলোগ্রামের মতো। সম্ভবত এটি অক্ষত অবস্থায় পৃথিবীতে প্রবেশ করতে পারে।

যদিও এর থেকে গুরুতর কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা কম। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “একটি সাধারণ উল্কাপাতের কারণে ক্ষতির যে সম্ভাবনা, এটির ক্ষেত্রেও তেমনটাই।”

মহাকাশযানটির সম্ভাব্য অবতরণ ক্ষেত্র নিয়েও বিজ্ঞানীরা ধারণা দিয়েছেন। তাদের মতে, এটি উত্তর অক্ষাংশ (লন্ডন বা কানাডার এডমন্টন) থেকে দক্ষিণ অক্ষাংশের কেপ হর্ন পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকার মধ্যে যে কোনো স্থানে পড়তে পারে। তবে পৃথিবীর বেশিরভাগ স্থান জল হওয়ায়, সম্ভবত এটি সমুদ্রে পতিত হবে।

প্রসঙ্গত, এর আগেও মহাকাশ থেকে বিভিন্ন বস্তুর অনিয়ন্ত্রিত পতনের ঘটনা ঘটেছে। ২০১৮ সালে চীনের তৈরি তিয়াংগং-১ মহাকাশ স্টেশনটি দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের উপর পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে ধ্বংস হয়ে যায়।

এছাড়াও, চীনের একটি রকেটও অনিয়ন্ত্রিতভাবে পৃথিবীতে ফিরে এসেছিল।

মহাকাশ বিজ্ঞানীদের মতে, এই ধরনের ঘটনা মহাকাশ এবং পৃথিবীর মধ্যেকার সম্পর্ককে আরও জটিল করে তোলে। ভবিষ্যতে মহাকাশ যাত্রা আরও বাড়লে, পৃথিবীর কক্ষপথে মহাকাশ বর্জ্যের পরিমাণও বাড়বে।

এর ফলে স্যাটেলাইট যোগাযোগ সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। তাই, মহাকাশ বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দেওয়া জরুরি।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *