গাজায় মানবিক সহায়তা কার্যক্রম প্রায় ভেঙে পড়ার দ্বারপ্রান্তে, সতর্কবার্তা রেড ক্রস-এর।
আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটি (আইসিআরসি) জানিয়েছে যে গাজা উপত্যকায় মানবিক পরিস্থিতি চরম অবনতির দিকে যাচ্ছে। ইসরায়েলের অবরোধের কারণে সেখানকার ফিলিস্তিনিরা মারাত্মক কষ্টের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। তাদের জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
সংস্থাটি শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানায়, অবিলম্বে যদি ত্রাণ সরবরাহ পুনরায় শুরু না হয়, তবে রেড ক্রস তাদের খাদ্য, ঔষধ এবং জীবন রক্ষাকারী উপকরণ সরবরাহ করতে পারবে না। এর ফলে গাজায় তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়বে।
গাজায় বসবাসকারী ২৩ লক্ষ ফিলিস্তিনির জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা খুবই জরুরি। কিন্তু ইসরায়েল এই সহায়তা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে। সেখানকার অধিকাংশ মানুষ বোমা হামলার কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং ইতোমধ্যে ৫০,০০০ এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
গত ২ মার্চ থেকে গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর আগে, জানুয়ারিতে প্রায় ছয় সপ্তাহ ধরে একটি যুদ্ধবিরতি চলছিল, যা ভেঙে যায়। রেড ক্রস সতর্ক করে বলেছে, অবরোধ অব্যাহত থাকলে তাদের মানবিক কার্যক্রম, বিশেষ করে খাদ্য বিতরণ, কয়েক সপ্তাহের বেশি চালানো সম্ভব হবে না। আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুযায়ী, ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের প্রয়োজনীয়তা মেটাতে ইসরায়েলের “সব ধরনের উপায়” ব্যবহার করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
আইসিআরসি-এর অপারেশন বিভাগের উপ-প্রধান, প্যাস্কেল হুন্দট বলেন, “গাজার বেসামরিক নাগরিকরা প্রতিনিয়ত লড়াই করে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন। তাদের উপর চলছে উদ্বাস্তু হওয়ার কষ্ট, যা অসহনীয়। তাদের জরুরি মানবিক সহায়তা থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে দেওয়া উচিত নয়।”
জাতিসংঘ (ইউএন) বারবার মানবিক বিপর্যয়ের বিষয়ে সতর্ক করেছে এবং অবরোধ চলতে থাকলে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (আনরুয়া)-এর প্রধান ফিলিপ্পে লাজারি বলেছেন, ইসরায়েলের অবরোধ গাজার শিশু, নারী, বৃদ্ধ এবং পুরুষদের উপর সম্মিলিত শাস্তি হিসেবে কাজ করছে।
ফিলিস্তিনি এনজিও নেটওয়ার্কের আমজাদ শাওয়ার মতে, গাজায় শিশুদের পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হচ্ছে এবং অপুষ্টির কারণে অনেকের মৃত্যুর সম্ভাবনা রয়েছে। শুক্রবারও গাজায় ইসরায়েলের বোমা হামলা অব্যাহত ছিল। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, ভোর থেকে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ২২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। বুরেইজ শরণার্থী শিবির এবং গাজা শহরের শেখ রাদওয়ান এলাকায়ও হামলা চালানো হয়।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা
 
                         
                         
                         
                         
                         
                         
				
			 
				
			 
				
			 
				
			